করোনা আবহে শিকেয় প্লাস্টিক ফুলমালার ব্যবসা, আর্থিক সঙ্কটে হুগলীর ব‍্যবসায়ী ও কারিগররা

আমাদের ভারত, হুগলী, ১৫ সেপ্টেম্বর: করোনা আবহে আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন হুগলী জেলার তারকেশ্বর, দশঘরা এলাকার প্লাস্টিক ফুলমালার ব‍্যবসায়ী ও কারিগররা। বিগত কয়েক বছর ধরেই দশঘড়ায় প্লাস্টিক ফুলমালার শিল্পের সাথে যুক্ত ব্যবসায়ী ও করিগররা আর্থিকভাবে সাফল্যের সাথে দিন যাপন করছিলেন। এলাকার ২০০ থেকে ২৫০ জন মহিলা কারিগরদের নিয়ে এই প্লাস্টিক ফুলমালার কাজ কারবার চলছিল।

জানা যায়, অন্যান্য বছর বিশ্বকর্মা পুজোর একমাস আগে থেকে কারিগরদের খাওয়া ঘুম উধাও হয়ে যায়। ভোর চারটে থেকে শুরু করে সন্ধ্যে আটটা পর্যন্ত নাগাড়ে ঘরে বসে কাজ করে যেতে হয়। কাজ হিসাবে তারা নায‍্য পারিশ্রমিকও পান, যা আমাদের পরিবারের বিশেষ করে দুর্গা পুজোর সময় খুব কাজে লাগে। কিন্তু এবছর করোনা মহামারীর জেরে সব শেষ হয়ে গেল।

এই ব্যবসার সাথে যুক্ত নিত্যানন্দ দাস, অমিত কুমার দাস, সুব্রত দাসরা জানালেন,”অন্যান্য বছর বিশ্বকর্মা পুজোর একমাস আগে থেকে এই ফুলমালার প্রচুর চাহিদা থাকে কারণ বিশ্বকর্মা পুজোয় যত রকমের কল কারখানা গাড়ি, লরি, বাস, মোটর সাইকেল, সাইকেল এক প্রকার সব গাড়িই ফুলমালা দিয়ে সাজানো হয়, এই কাজের সাথে যুক্ত ২০০ থেকে ২৫০ জন মহিলা কর্মীদের ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়ারও সময় থাকে না, ভোর চারটে থেকে রাত আটটা পর্যন্ত আমাদের কাজ চলে কিন্তু করোনা আবহে এবছর আর্থিকভাবে প্রচুর লোকসানের মুখে আমরা। কারণ সাধারণত চায়না মাল দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে এই প্লাস্টিক মালা, দেশে চায়না মাল বন্ধ করে দেওয়ায় আমরাও দেশী মালের উপর জোর দিচ্ছি, কিন্তু ট্রেনের চলাচল না থাকায় দিল্লি ও কলকাতা থেকে কাঁচামাল আমদানি ও রপ্তানিতে প্রচুর সমস্যা হচ্ছে এবং অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও সেইভাবে অর্ডার নেই। ট্রান্সপোর্টে মাল আমদানি ও রপ্তানিতে খরচ বেড়ে যাচ্ছে এতে লাভের অংশ অনেক কমে গেছে এবং তুলনামূলক অর্ডার না থাকায় আমাদের শ্রমিকও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, এবং সরকারিভাবে কোনও রকম সাহায্য না পাওয়ায় আমাদেরকে ছোট ছোট মাইক্রোফাইনান্সয়ের  জায়গা থেকে বেশি সুদে লোন নিয়ে কাজ কারবার চালাতে হয়। এবছর সেইভাবে কাজ কারবার না হ‌ওয়ায় আর্থিক ভাবে বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছি।

এই ফুল মালা আমাদের রাজ্যের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্যে রপ্তানি করে থাকি এই বছর সেই ভাবে উপার্জন করা যায়নি তার উপর লোনের বোঝা মাথায়। এখন কি ভাবে এই লোন শোধ করবো সেই নিয়ে ভাবছি। আমরা এই ব্যবসাটি আরো বাড়াতে চাই। রাজ্য সরকার যদি একটু বিবেচনার চোখে দেখে এই শিল্পে আর্থিক ঋণের ব্যবস্থা করে দেন তো খুবই উপকৃত হব বলে  জানান ঐ ব্যাবসায়ীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *