আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ৮ আগস্ট: প্রথম ধাপে টানা তিন মাস লকডাউন। মাসখানেক মন্দির খুললেও ফের ১ আগস্ট থেকে বন্ধ তারাপীঠ মন্দির। ফলে মাথায় হাত পড়েছে তারাপীঠের হোটেল ব্যবসায়ীদের। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে হোটেল খুলে করোনার আর লকডাউনের ধাক্কায় বিপাকে হোটেল মালিকরা। কিভাবে ঋণের টাকা পরিশোধ করবেন সেই চিন্তায় ঘুম ছুটেছে মালিকদের।
কথায় আছে লজ নগরী তারাপীঠ। কেউ কেউ আবার কংক্রিটের জঙ্গলও বলে তারাপীঠকে। কারন মা তারাকে সামনে রেখে তারাপীঠ ও রামপুরহাট থানা এলাকার মধ্যে গজিয়ে উঠেছে ছোট বড় মিলে প্রায় পাঁচশো লজ। এই সমস্ত লজের একটি বড় অংশের মালিক এলাকার বাইরের বাসিন্দারা। অধিকাংশ মালিকই ব্যাঙ্ক থেকে মোটা টাকা ঋণ নিয়ে লজ নির্মাণ করেছেন। করোনার কারনে ১৮ মার্চ থেকে তারাপীঠ মন্দির বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে পুন্যার্থীদের ভরসায় চলা হোটেলও বন্ধ হয়ে যায়। অধিকাংশ হোটেল মালিক কর্মী ছাঁটাই করে গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। কেউ বা শুধু হোটেল পাহারা দেওয়ার জন্য একজন কর্মী রেখে বেতন গুনছেন।
২৩ জুন থেকে ফের মন্দির খোলায় কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ১ আগস্ট থেকে ফের মন্দির বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে হোটেল ব্যবসায়ীরা। আর কিছুদিন আভবে চলতে থাকলে বেশ কিছু হোটেল বিক্রি করে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না মালিকদের।
হোটেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সুনীল গিরি বলেন, “হোটেল ব্যবসা এখন খুব খারাপ অবস্থায় চলছে। কারন তারাপীঠে মা তারাকে সামনে রেখেই চলে হোটেল ব্যবসা। কিন্তু মন্দির বন্ধ থাকলে মানুষ তারাপীঠে আসবেন কেন। কবে এই অবস্থার অবসান হবে একমাত্র মা তারাই জানেন।” সংগঠনের সম্পাদক বিমান চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অধিকাংশ হোটেল মালিক ব্যাঙ্ক থেকে মোটা টাকা ঋণ নিয়ে হোটেল খুলেছেন। এখন যা পরিস্থিতি চলছে তাতে ঋণের কিস্তি কিভাবে পরিশোধ হবে সেই চিন্তাই দিন গুনছেন অনেকেই। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে বহু হোটেল বন্ধ হয়ে যাবে।” হোটেল মালিক শুভময় চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মোটা টাকা ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে হোটেল নির্মাণ করেছি। এখন হোটেল পাহারা দেওয়ার জন্য একজন কর্মীকে রাখা হয়েছে। তাতেই যা বিদ্যুৎ বিল লাগে তা নিয়েই চিন্তিত আমরা। তাছাড়া তারাপীঠ খুলে গেলেও আতঙ্কে মানুষ এখন আসবে না। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তা কেউ বলতে পারব না। ফলে বছর দুয়েক হোটেল ব্যবসায় কোনও উন্নতি লক্ষ করছি না।”