আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার,১৬ সেপ্টেম্বর: করোনা জয়ীরা সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে যাবার পর তাদের শারীরিক পরিস্থিতি কীরকম রয়েছে তা জানতে এবার তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করল আলিপুরদুয়ার জেলা স্বাস্থ্য দফতর। উত্তরবঙ্গে প্রথম আলিপুরদুয়ার জেলায় সপ্তাহে একদিন করে করোনা জয়ীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখার কাজ শুরু হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সুত্রে জানা গেছে, প্রতি মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল, বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল সহ ৫টি গ্রামীণ হাসপাতালে এই স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলবে। যে ৫টি গ্রামীণ হাসপাতালে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গলবার করে করোনা জয়ীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলবে সেগুলি হল পাচকেলগুড়ি, ফালাকাটা, লতাবাড়ি, কামাক্ষাগুড়ি ও মাদারিহাট গ্রামীণ হাসপাতাল। করোনা থেকে সেরে ওঠার পর করোনা জয়ীদের হার্ট, কিডনি, ফুসফুস ও অনান্য শারীরিক কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতেই স্বাস্থ্য দফতর এই অভিযান শুরু করেছে। তবে এর মূল কারন হিসেবে করোনা থেকে সেরে ওঠার পর অনেক করোনা জয়ীর ফুসফুসে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। সেটাই মূলত ফের পরীক্ষা করে দেখা হবে। তার জন্যই জেলার করোনা জয়ীদের সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার করে উল্লেখিত হাসপাতালগুলিতে আসতে বলেছে স্বাস্থ্য দফতর।
হাসপাতাগুলিত আউটডোরেই করোনা জয়ীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ হবে। পরীক্ষায় যদি দেখা যায় কারও ফের অন্য কোনও সমস্যা হচ্ছে তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে চিকিৎসার জন্য আবারও হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা করা হবে। তবে তার জন্য তাঁকে আবার কোভিড হাসপাতালে যেতে হবে না। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালেই ভর্তি হতে পারবেন। এজন্য জেলা স্বাস্থ্য দফতর আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে আলাদাভাবে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য ৫টি করে মোট ১০শয্যার একটি পৃথক ওয়ার্ড তৈরী করেছে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-২ সুবর্ন গোস্বামী জানান, “করোনা থেকে সেরে ওঠার পরেও অনেকের কিডনি, ফুসফুস ও হার্ট সহ নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেইজন্যই সদ্য করোনা থেকে সেরে ওঠার পর জেলার করোনা জয়ীদের ফের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটা আলিপুরদুয়ারেই প্রথম শুরু হয়েছে। পরীক্ষায় কোনও সমস্যা দেখা দিলে ফের তাদের জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে নিয়ে চিকিৎসা করানো হবে।
প্রসঙ্গত গত সোমবার পর্যন্ত জেলায় মোট ৩৪৬৬জন করোনা আক্রান্ত রোগীর হদিস পাওয়া গেছে। যারমধ্যে ১৮৭৪জন ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে নিজেদের বাড়ি ফিরেছেন। এখনও চিকিৎসারত রয়েছেন ১৫৮০জন। মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকজনের। এহেন পরিস্থিতিতে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন জেলাবাসী সহ সকল স্তরের মানুষ।