হাওড়া এখনও বহন করে চলেছে অভিশপ্ত নীলকুঠির ইতিহাস

আমাদের ভারত, হাওড়া, ৪ মার্চ: দিন আসে দিন যায়।কালের সাক্ষী রয়ে যায়। সেই কবে এ দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছে প্রবল পরাক্রান্ত ইংরেজ। তবে আজও তাদের অত্যাচারের ইতিহাস নীরবে কাঁদে ইঁট পাথর আর লুপ্ত জনপদের মাঝে। হাওড়ার বুকে এখনও রয়ে গিয়েছে ইংরেজ শাসনের নির্মম ইতিহাসের সাক্ষী, যেখানে গেলে আজও শুনতে পাওয়া যায় উৎপীড়িত নীলচাষীদের আর্ত চিৎকার।

সেই নীলচাষ, যা বন্ধ করার জন্য সাংবাদিক হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় লড়াই চালিয়েছিলেন। দীনবন্ধু মিত্র লিখেছিলেন নীলদর্পন” নাটক। সেই নাটক দেখে বিদ্যাসাগর মহাশয় রাগে জুতো ছুঁড়েছিলেন মঞ্চে। সেটা অত্যাচারী নীলকরের ভূমিকায় অভিনয়ের মুন্সিয়ানা হতে পারে কিন্তু নীলচাষ করতে গিয়ে বাংলার চাষীদের যন্ত্রনা অভিনয় ছিল না। হাওড়ার ডোমজুড়ের খাঁটোরার কনককোনার নীল কুঠিতে আজও সেই ইতিহাসের কথা বলে। সে সময়কার নীলচাষীদের লাল রক্ত আজও মলিন হয়ে রয়েছে ভাঙ্গা কুঠির ইট, পাথরে।

জানা যায়, এই এলাকার জনৈক চন্ডীচরন ঘোষ ছিলেন নীল চাষীদের গোমস্তা। বংশ পরম্পরায় এখানে ছিল নীলের গোডাউন। হাওড়ার বিভিন্ন স্থান থেকে নীল এনে তা মজুত করে জলপথে পাঠানো হত ইংলন্ডে। সেই সব কথাই শোনালেন সাহিত্যিক উল্লাস মল্লিক। জানা গিয়েছে, চন্ডী চরনের ছেলে গৌর চন্দ্র, তার ছেলে নগেন্দ্র, সুরেন্দ্র, খগেন্দ্র, যতীন্দ্র। আজও সেই ঘোষ পরিবার নীলকরদের ইতিহাস বহন করে চলেছে। কালের নিয়মেই চলে গিয়েছে ইংরেজ।কিন্তু তাদের নীলকুঠি আজো সাক্ষ্য বহন করে– পড়ে থাকা ইট, পুকুর সহ একাধিক চিহ্ন। আর জানান দেয় এই ইতিহাস, তা হল হাওড়াতেও চাষ হতো নীলের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *