আমাদের ভারত, ২২ জুন: গতকাল থেকেই টানটান রাজনৈতিক উত্তেজনা রয়েছে মহারাষ্ট্রে। রাজনৈতিক সংকটের মাঝে বুধবার বারবার শোনা গেছে পদত্যাগ করতে পারেন উদ্ধব ঠাকরে। শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউতের বক্তেব্যে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। কারণ তিনি বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তার কথায় মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেভাবে বদলে যাচ্ছে তাতে বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার পথেই এগোচ্ছে। যদিও বিধানসভা ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা বললেও লড়াই না ছাড়া কথা বলেছিলেন তিনি। এবার আজ সন্ধ্যার সময় কিছুটা একই সুর শোনা গেল মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকুরের কন্ঠেও।
সন্ধ্যেবেলায় ফেসবুক লাইভে জনগণ ও শিবসেনা বিধায়কদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। তিনি জানান, তিনি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগের জন্য প্রস্তুত। একই সঙ্গে দলের প্রধানের পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা জানান তিনি। রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “বিদ্রোহী বিধায়করা যদি আমাকে না চান তাহলে আমি এখনই ইস্তফা দিতে প্রস্তুত। পদত্যাগপত্র তৈরি রেখেছি বিধায়করা এসে আমাকে বলুক যে তারা আমাকে চান না।”
হিন্দুত্বের আদর্শের কথাও তিনি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “হিন্দুত্ব শিবসেনার পরিচয় ও আদর্শ। হিন্দুত্ব আমাদের জীবন।” তিনি আরও বলেন, যদি কোনো একজন বিধায়কও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে না দেখতে চান আমাকে, আমি আমার সমস্ত কিছু নিয়ে বর্ষা বাংলা থেকে মাতশ্রীতে চলে যেতে তৈরি। অনেকটা বিদায়ের ভঙ্গিতে সকল জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী পদ আসবে ও যাবে কিন্তু মানুষের ভালবাসাই আসল। গত দু’বছরে আমি যথেষ্ট সৌভাগ্যবান যে আমি মানুষের কাছ থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি।”
মহারাষ্ট্রের সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে গতকাল থেকে সংশয় প্রকাশ করা হচ্ছে। শিবসেনা বিধায়ক একনাথ শিণ্ডে গতকাল একাধিক শিবসেনা বিধায়ককে নিয়ে মোদীর রাজ্য গুজরাটের একটি হোটেলে গিয়ে ওঠেন। সেখানে তাদের মান ভাঙাতে দূত পাঠান উদ্ধব। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। উল্টে শিবসেনার মুখ্যমন্ত্রীর প্রভাব থেকে সরিয়ে আনতে আজ ভোররাতে অসমের একটি পাঁচতারা হোটেলে গিয়ে ওঠেন একনাথ শিণ্ডে সহ বাকি বিদ্রোহী বিধায়করা। বিকেল অব্দি শিণ্ডে দাবি করেছেন, তার সঙ্গে ৪৬ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। সেই সমর্থন আরো বাড়তে পারে। এরপরই শিণ্ডের ক্ষমতার কাছে উদ্ধবের ক্ষমতা কিছুটা হলেও পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।