রাজেন রায়, পানিহাটি, ২৬ ডিসেম্বর: শুভেন্দু যখন বিধায়ক এবং মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন, তখন দলের তরফে মধ্যস্থতা করে তাকে বোঝানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল দমদম লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সৌগত রায়কে। যদিও সেই বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি এবং শুভেন্দু পরবর্তী সময়ে বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু শুভেন্দুর এই আচরণে যাতে দলীয় কর্মীদের মনোবলে চিড় না ধরে, তার জন্য পানিহাটির সভা থেকে ফের দলত্যাগী শুভেন্দু অধিকারীকে নাম করে তীব্র ঝাঁঝালো ভাষায় আক্রমণ করলেন সৌগত রায়৷
সৌগত রায়কে সাধারণ মানুষ বরাবরই দেখেছেন স্পষ্ট রুচিশীল বক্তা হিসাবে। সেই সৌগত রায় এদিন রীতিমতো বলিউড ফিল্মের ডায়লগ আউড়ে শুভেন্দুকে হুঁশিয়ারি দেন, ‘শুভেন্দু দুধ চাও তো ক্ষীর দেব, মমতার পদ চাইলে চিরে দেব৷ দলে রাখার জন্য শুভেন্দুর হাতে পায়ে ধরেছিলাম ৷ বলেছিলাম ২০০৬ থেকে আছিস আমাদের সঙ্গে, এখন যাস না বাবা। এবার মুখ দর্শন করব না৷’ হুঁশিয়ারির সুরে প্রাক্তন সতীর্থ এবং বর্তমানে বিজেপি নেতা শুভেন্দুকে শাসিয়ে বলেন, ‘শুভেন্দুর বাড়ির দরজায় মাইক লাগিয়ে বুঝিয়ে দিয়ে এসেছি, এবার বাড়ির ভিতর ঢুকে মাইক বাজাব।’
হাতে গেরুয়া পতাকা তুলে নেওয়ার পরের মুহূর্ত থেকেই পুরনো দল ও দলনেত্রীকে নিয়ে আক্রমণাত্মক শুভেন্দু অধিকারী৷ তার রাজনৈতিক আক্রমণ একদিকে যেমন বিজেপি কর্মীদের অক্সিজেন জোগাচ্ছে ঠিক তেমনই অস্বস্তিতে ফেলছে তৃণমূলকে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ প্রসঙ্গে এদিন সৌগত রায় বলেন, ‘একটা সিনেমা দেখেছিলাম মিশন কাশ্মীর। তার একটা ডায়লগ ছিল৷ দুধ মাঙ্গো তো ক্ষীর দেঙ্গে, কাশ্মীর মাঙ্গো তো চির দেঙ্গে৷ শুভেন্দুকেও বলি, মমতার পদ চাও তো চির দেঙ্গে ৷ লড়াইটা এই জায়গায় এবং লড়াইটা আমরা করব ৷
শুধু তাই নয়, সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রী লম্বা দাড়ি রাখা নিয়ে মোদিকে কটাক্ষ করে সৌগত রায় বলেন, ‘লম্বা দাড়ি রাখলেই কেউ রবীন্দ্রনাথ হয় না৷ তাহলে তো রামছাগলও রবীন্দ্রনাথ হত৷ রবীন্দ্রনাথ বললেই হয় না, বাঙালির মানসিকতা বুঝতে হয়৷’ কৃষক আন্দোলন প্রসঙ্গেও এদিন মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ান সৌগত রায়। বলেন, ‘এই কৃষক আন্দোলনই আপনার সরকার উপড়ে ফেলবে। আমরা কৃষকদের সঙ্গে আছি৷’