বালুরঘাটে প্রশাসনের নাকের ডগায় স্ট্যাম্পের রমরমা কালোবাজারি, অমিল দশ, কুড়ি ও পঞ্চাশের স্ট্যাম্প

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২৫ নভেম্বর : প্রশাসনের নাকের ডগায় রমরমা স্ট্যাম্পের কালোবাজারি বালুরঘাটে। দশ, কুড়ি ও পঞ্চাশ টাকার স্ট্যাম্পের কৃত্রিম ক্রাইসিস তৈরি করে সাধারণের পকেট কাটবার অভিযোগ একশ্রেনীর স্ট্যাম্প বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে। দীর্ঘ কয়েকমাস যাবত খোদ প্রশাসনিক চত্বরে স্ট্যাম্পের এমন রমরমা কালোবাজারি চললেও নিশ্চুপ প্রশাসন। ক্ষোভ সাধারণ মানুষদের। লিখিত অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখার আশ্বাস আধিকারিকের।

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সদর শহর বালুরঘাটের জেলা শাসক অফিস সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে সরকারি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অফিস থেকে শুরু করে আদালত সবই। ফলে এই সমস্ত সরকারি অফিস আদালতে নিজেদের কাজের প্রয়োজনে আসা গ্রাম-শহরের মানুষদের প্রত্যেকদিন বিভিন্ন কাজে প্রয়োজন হয় স্ট্যাম্পের। আর সেই স্ট্যাম্প পেপার কিনবার জন্য একপ্রকার প্রায় নির্ভরশীল জেলা নিবন্ধকের কার্যালয় ভবনের নীচে বসা স্ট্যাম্প পেপার বিক্রেতাদের উপরেই। যেটি জেলা প্রশাসনিক ভবন চত্বরেই রয়েছে। বিগত বেশকিছুদিন যাবত সেই স্ট্যাম্প বিক্রেতাদের কাছে ১০, ২০ ও ৫০ টাকার স্ট্যাম্প পেপার কিনতে এসে চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন জেলার দুর দুরান্ত থেকে আসা মানুষজন। কেননা ১০,২০ ও ৫০ টাকার স্ট্যাম্পের কৃত্রিম সঙ্কট দেখিয়ে বিক্রেতাদের অনেকেই তা গোপনে বিক্রি করছেন বেশি দামে। কেউ কেউ আবার নেই বলে জানিয়ে একশো টাকার স্ট্যাম্প বিক্রি করছে। আর যার জেরে গ্রাম থেকে শহরে নানা কাজ করতে এসে বিপাকে পড়তে হচ্ছে অনেককেই। দীর্ঘ কয়েকমাস যাবত স্ট্যাম্পের এমন সঙ্কট চললেও উদাসীন প্রশাসন। শুধু তাই নয়, ছোট অঙ্কের ওই সমস্ত স্ট্যাম্প গুলি প্রশাসনিক চত্বরে কিভাবেই বা গোপনে বেশি দামে বিক্রি চলছে তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।

স্ট্যাম্প পেপার কিনতে আসা ক্রেতা সন্তোষ মাহাতো ও আশীষ নন্দীরা বলেন ১০টাকা অথবা ২০ টাকার স্ট্যাম্প কিনতে এসেছিলাম কিন্তু পায়নি। এর আগেও স্ট্যাম্প কিনতে এসেছিলাম কিন্তু স্ট্যাম্প না মেলায় স্ট্যাম্প কিনতে পারিনি। ১০০ টাকার স্ট্যাম্প পেপার পাওয়া যাচ্ছে কিন্তু ৫০ টাকার স্ট্যাম্পও পাওয়া যাচ্ছে না। দুই জায়গায় শুনে এলাম, বলছে ১০০ টাকার নীচের স্ট্যাম্প পেপার নেই। তিনি বলেন বাধ্য হয়েই বেশী দামের স্ট্যাম্প কিনতে হচ্ছে। যে কাজটা আমার ১০ টাকার স্ট্যাম্প পেপার কিনলেই হয়ে যায় সেখানে আমাকে গতকাল ৫০ টাকার স্ট্যাম্প পেপার কিনতে হয়েছে। পাশাপাশি ১০টাকা/২০ টাকার স্ট্যাম্প পেপার অমিল থাকার বিষয়ে তিনি প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্ট্যাম্পগুলিকে সরাবরাহ করার একটা ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ বলে দাবী করেন এদিন সংবাদমাধ্যমের সামনে।

সুজিত পাল নামে এক স্ট্যাম্প পেপার বিক্রেতা বলেন সরাবরাহ কম রয়েছে, যারা প্রথমে আসছে তারা পাচ্ছে কিন্তু যারা পরে আসছে তারা পাচ্ছে না। কয়েকদিন ধরে চালান বন্ধ আছে যে কারনে স্ট্যাম্প পাওয়া যাচ্ছে না, আগামীকাল স্ট্যাম্প বেরোনোর কথা যদি বের হয় তাহলে পাওয়া যাবে। তবে বিগত ৩-৪ মাস ধরে চাহিদার তুলনায় যে ১০ টাকা / ২০ টাকা স্ট্যাম্প পেপারের সরাবরাহ যে যথেষ্টই কম ছিল তাও তিনি সাফ জানান এদিন।

স্ট্যাম্প পেপার অমিল বিষয়টি সম্পর্কে বালুরঘাট ট্রেজারি ১-এর ট্রেজারি অফিসার পার্থ সারথি হালদার-এর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন এই ব্যাপারে লিখিত কোন অভিযোগ আমার কাছে আসেনি তার জন্য ব্যাপারটা আমি জানিনা এখনও। এখন আপনারা বলতে আমি জানতে পারলাম। এই বিষয়ে আমি খোঁজ নিয়ে কয়েকদিন বাদে আমি আপনাদের হয়ত জানাতে পারব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *