দেশের মধ্যে বাংলায় করোনায় মৃত্যু হার সর্বোচ্চ, রাজ্যকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখালো কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল

আমাদের ভারত, ৪ মে:সারাদেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে করোনায় মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। কেন্দ্রের পাঠানো আন্তঃ মন্ত্রক প্রতিনিধি দল যাওয়ার আগে একেবারে চোখে আঙ্গুল দিয়ে রাজ্যকে সেটা দেখিয়ে গেল। সোমবার দিল্লি ফিরে যাওয়ার আগে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের প্রধান অপূর্ব চন্দ্র রাজ্যের মুখ্য সচিব রাজীব সিনহাকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে গেছেন সেকথা। একই সঙ্গে রাজ্যের তরফে তাদের সঙ্গে তীব্র অসহযোগিতার অভিযোগ করেছে ওই কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের প্রধান অপূর্ব চন্দ্র।

অপূর্ব চন্দ্র তা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, ৩০ এপ্রিল রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে করোনা আক্রান্তদের মৃত্যু এবার দৈনন্দিন পরিসংখ্যানে স্থান পাবে। তিনি বলেছেন স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এটি যথেষ্ট বড় পদক্ষেপ অবশ্যই। আর রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে একটা বড় বিষয় সামনে এসেছে। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, করোনায় মোট আক্রান্ত ৮১৬ জন। তার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১০৫ জনের। আর এই পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট পশ্চিমবঙ্গে করোনায় মৃত্যু হার ১২.৮ শতাংশ। যা গোটা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।

মৃত্যুর হার তুলে ধরে, প্রতিনিধি দলের প্রধান বলেন এই পরিসংখ্যান প্রমাণ করছে পশ্চিমবঙ্গে, অত্যন্ত কম টেস্ট হচ্ছে এবং নজরদারিও যথেষ্ট দুর্বল।

বিরোধীদল এবং রাজ্যপালের মতোই এদিন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলও স্পষ্ট করেছেন রাজ্যে করোনায় কতজন আক্রান্ত এবং কত জনের মৃত্যু তা নিয়ে রাজ্যের দেওয়া পরিসংখ্যানে অস্বচ্ছতা রয়েছে। চিঠিতে অপূর্ব চন্দ্র লিখেছেন, ৩০ তারিখের বুলেটিনে বলা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ৫৪২ অ্যাকটিভ কেস রয়েছে। ১৩৯ জন চিকিৎসার পর সুস্থ হয়েছেন। ৩৩ জন মারা গেছেন। অর্থাৎ মোট কেশ ৭৪৪। আবার সেই দিনকেই রাজ্য সরকারের তরফে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। ওই চিঠিতে যে পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে তাতে রাজ্যে মোট ৯৩১ জন করোনা পজিটিভ উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ এই দুটি মিলিয়ে দেখতে গেলে ১৮৭ টি
কেস গরমিল রয়েছে।

একই সঙ্গে ১ মে এবং ২মে রাজ্য সরকার যে বুলেটিন প্রকাশ করেছে তাতে করোনা পজিটিভের সংখ্যা থাকলেও মৃত্যুর সংখ্যা ছিল না। ফলে পরিসংখ্যান প্রকাশের ক্ষেত্রে রাজ্যের স্বচ্ছতা বজায় রাখা বাঞ্ছনীয় বলে উল্লেখ করেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল । তারা রাজ্য সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে রাজ্য সরকার প্রয়োজনে হাসপাতালগুলিতে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ করুক প্রয়োজনে অতিরিক্ত সময় কাজ করার জন্য তাদের বেশি ভাতা দিক।

রাজ্যের বিরোধী দল তথা রাজ্যে চিকিৎসকদের একটা অংশ বারবার অভিযোগ করেছে রাজ্য সরকার করোনা সংক্রমিত মৃতের সংখ্যা সঠিকভাবে তুলে ধরছে না। তথ্য গোপনের অভিযোগ করছেন তারা। এইপ্রসঙ্গে প্রতিনিধি দল বলছে সংকটের সময় সরকারের বিরুদ্ধে যদি মানুষের তথ্য গোপনের ধারণা তৈরি হয় তা অবশ্যই উদ্বেগের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *