
পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২৮ ফেব্রুয়ারি: চালকল মালিকদের বদান্যতায় জাতীয় সড়কের ধারে রোজ তৈরি হচ্ছে মরণফাঁদ! যে ফাঁদে পড়ে জীবন হারালেন এক রস বিক্রেতা। মুহুর্তেই ঝলসে যায় তাঁর গোটা শরীর। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় কান্দু দাসের। মঙ্গলবার সকাল থেকে এই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় পতিরাম থানার পার পতিরাম এলাকায়। ঘটনা নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন উত্তেজিতরা।
জানা যায়,পতিরাম থেকে গঙ্গারামপুর যাবার ৫১২ জাতীয় সড়কের ধারেই চালকল মালিকরা তৈরি করেছে মরণফাঁদগুলি। চালকলের পরিত্যক্ত কালো ছাইগুলি রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন জায়গায় গোপনে ফেলে পালিয়ে যাচ্ছে মিল মালিকরা। গরম সেই ছাইয়ের মধ্যে থেকে যাচ্ছে আগুন। আর তাতে করে রোজই বাড়ছে দুর্ঘটনা। সোমবার বিকেলে এমনই এক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক আখের রস বিক্রেতার। জানা যায়, পার পতিরামের হালদার পাড়া এলাকার বাসিন্দা কান্দু দাস দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকাতে গাড়ি করে আখের রস বিক্রি করতেন। ওইদিন বিকেলে গাড়ি থেকে জলের মগ পড়ে যেতেই তা তুলতে যান তিনি। কিছুটা নীচে পড়ে থাকা কালো ছাইগুলোর মধ্যে নামতেই যেন আগুনে জ্বলে যান ওই রস বিক্রেতা। যা দেখতেই চোখ কপালে ওঠে স্থানীয়দের। যাদের তৎপরতায় তড়িঘড়ি বালুরঘাট হাসপাতালে নিয়ে আসা হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। এদিন সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মৃত্যু হয়েছে তার। যে ঘটনা নিয়েই প্রশাসনিক উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
তাদের অভিযোগ, এলাকার এক মিল মালিক রাতের অন্ধকারে এই সমস্ত কালো ছাইগুলি তাদের এলাকায় ফেলে জায়গা ভরাট করছে। যেগুলিই মরণফাঁদ হয়ে দাড়িয়েছে সকলের কাছে। বেশ কয়েকদিন আগে এই কালো ছাইয়ের মধ্যে পড়ে গিয়ে পুড়ে গিয়েছিল এক কিশোরও। বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদিন সেখানে পড়েই মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির। এই ঘটনা নিয়ে অবিলম্বে ওই অভিযুক্ত মিল মালিকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা। আর এরই প্রতিবাদে এদিন জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। যদিও পরবর্তীতে দমকলকর্মী ও জেসিবি নিয়ে এসে লুকিয়ে থাকা পুরো আগুন নিভিয়ে পুলিশ স্বাভাবিক করেছে পরিস্থিতি।
এলাকার বাসিন্দা বিউটি চৌধুরী ও সঞ্জিত মন্ডলরা বলেন, মিল মালিকদের ফেলে যাওয়া ছাই থেকে ঘটছে একের পর দুর্ঘটনা। যার পরেও প্রশাসনের হেলদোল নেই। ঘটনা নিয়ে তারা বাসিন্দারা যথেষ্টই ভীত সন্ত্রস্ত্র হয়ে রয়েছেন। বিশেষ করে ছোট ছোট বাচ্চাদের কথা ভেবে আতঙ্কিত বোধ করছেন তারা।