এসএসসি-র ভুয়ো নিয়োগের রিপোর্টে ৮ কর্তাকে অভিযুক্ত, নিন্দাবাদ শিক্ষামহলেই

অশোক সেনগুপ্ত, আমাদের ভারত, ১৩ মে: এসএসসি-তে ৩৮১ জনকে ভুয়ো নিয়োগের ব্যাপারে রিপোর্টে ৮ কর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। নিন্দাবাদ উঠতে শুরু করেছে শিক্ষামহলের অভিজ্ঞদের তরফে।

শিক্ষাবিদ তথা প্রাক্তন উপাচার্য ডঃ বাসব চৌধুরী প্রতিক্রিয়ায় এই প্রতিবেদককে বলেন, “আমার বক্তব্য সংক্ষিপ্ত। এ ম্যান ইজ নোন বাই দি কোম্পানি হি কিপস। এ সোসাইটি ইজ নোন বাই ইটস এডুকেশন লিডার্স। যা শুনছি তাতে মনে হচ্ছে অশিক্ষিতরা অনেক বেশি ডিগনিফায়েড। এ আমাদের সামগ্রিক লজ্জা। অনেকে হয়ত বলবেন অপরাধীরা এখন অধ্যক্ষ ও উপাচার্য।”

অধ্যাপক-গবেষক শুভেন্দু মজুমদার প্রতিক্রিয়ায় এই প্রতিবেদককে বলেন, “বিচারপতি বাগকে প্রথমেই অভিনন্দন জানাই। ইতিপূর্বে এ দেশে বহু তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে দিনের আলোয় আর রাতের আঁধারে সেগুলো বিলীন হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে সেটা যে হয়নি তার পুরো কৃতিত্ব বিচারপতি বাগের।

সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর হবে। পুলিশি তদন্তের স্বার্থে হয়তো গ্রেপ্তারিও করতে হতে পারে অভিযুক্তদের। আমি যেটা জানতে চাই তা হল, অভিযুক্তদের নিরপরাধ প্রমাণ করার জন্যে কি সরকারি কোষাগারের টাকা ব্যায় করা হবে? তাহলে অনন্তকাল খেলা চলবে। হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ, ডিভিশন বেঞ্চ, তারপর সুপ্রিম কোর্ট।

অভিযুক্তদের নিরপরাধ প্রমাণ করার জন্যে সরকারি পয়সায় কপিল সিব্বাল বা অভিষেক মনু সিঙ্গভিকেও দাঁড় করানো হতে পারে। আর যতদিন মামলা চলবে ততদিন কাউকে আইনের ভাষায় ‘অপরাধী’ বলা যাবে না। আর যারা যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরি পেলো না তারা কি ততদিন হাতে পেনসিল নিয়ে দিন কাটাবে?“

এ ব্যাপারে কলকাতা হাই কোর্ট রায় দেবে বুধবার। এসএসসির গ্ৰুপ-ডি, গ্ৰুপ-সি এবং শিক্ষক নিয়োগ মামলার শুনানি হল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি আনন্দ কুমার মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। প্রায় এক মাস পর এই মামলার শুনানি হল শুক্রবার।

বাগ কমিটি যাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করার তালিকা দিয়েছে, তাতে নিম্নলিখিত ব্যক্তিদের নাম আছে—
১) সৌমিত্র সরকার, ২) অশোক কুমার সাহা, ৩) কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, ৪) শান্তিপ্রসাদ সিনহা ও ৫) সমরজিৎ আচার্য। রিপোর্টে বিভাগীয় তদন্তের সুপারিশ করা হয়েছে নিম্নলিখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে: সুবীরেশ ভট্টাচার্য, চৈতালি ভট্টাচার্য, শর্মিলা মিত্র, মহুয়া বিশ্বাস, শুভজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও শেখ সিরাজ উদ্দিন। এঁরা প্রায় সকলেই সরকারের শিক্ষা দফতরের অত্যন্ত দায়িত্বপূর্ণ ও উচ্চপদে ছিলেন বা আছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *