রাজেন রায়, কলকাতা, ১৪ জুলাই: লকডাউনের মধ্যে মানুষের আনাগোনা কম থাকায় কিছুটা দ্রুত গতিতে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ এগিয়ে নিতে চেয়েছিলেন মেট্রো আধিকারিকরা। কিন্তু তাতেও থাবা বসাল করোনা। সূত্রের খবর, ধর্মতলা থেকে বউবাজার অংশে মেট্রোর সুড়ঙ্গ নির্মাণের যাঁরা কাজ করছিলেন তাদের মধ্যে প্রায় ৩০ জন কর্মী-আধিকারিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এমনকি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন টানেল ইনচার্জ নিজেও। এর ফলে আগামী ১০ দিন টানেলের কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে অনিশ্চিত হয়ে পড়ল ধর্মতলা থেকে শিয়ালদহ অংশের কাজ।
এদিকে পরিকল্পনা করে সমস্ত সুরক্ষাবিধি মেনে কাজ শুরু করেও কাজ আটকে যাওয়ায় হতাশ কে এম আর সি এল। এর আগেও এই প্রকল্পের কাজে বাধা পড়েছিল। মেট্রোর সুড়ঙ্গ তৈরির সময় বউবাজারে ভেঙ্গে পড়ে একের পর এক বাড়ি, অনেক বাড়িতে ধরে যায় ফাটল। বিষয়টি গড়ায় আদালত পর্যন্ত। হাইকোর্ট কাজ বন্ধ রাখার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেয়।
এর জেরে দুটি টানেল তৈরির কাজ আটকে যায়। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অনুদান আসায় লকডাউনে দ্রুতগতিতে কাজ শেষ করে চমক দিতে চেয়েছিলেন মেট্রো আধিকারিকরা। একটি টানেল বোরিং মেশিন চান্ডি এখনও মাটির নীচে বউবাজারে আটকে আছে।
অপর টানেল বোরিং মেশিন উর্বী টানেল খোঁড়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। কাজের গতিতে কে এম আর সি এল আশাবাদী ছিল আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে শিয়ালদহ অবধি টানেল পৌছানো যাবে। কিন্তু সমস্তটাই আটকে গেল করোনার করালগ্রাসে।
প্রসঙ্গত, ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পে ১৫০ জনেরও বেশি কর্মী কাজ করছিলেন। তার মধ্যে মেট্রো আধিকারিকরা সহ নির্মাণকারী সংস্থা কেএমসিআরএল কর্মীরাও ছিলেন। মাটির নিচে তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে পিপিই পরেই কাজ হত। নামার আগে তাঁদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হতো। মাস্ক, গ্লাভস বাধ্যতামূলক তো ছিলই, করোনা পরিস্থিতিতে স্যানিটাইজারও বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়। এরপরেও জন কর্মী করোনা পজিটিভ আশায় কর্মরত ১৫০ জন কর্মীকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে সঙ্গে এই প্রকল্প আপাতত বিশবাঁও জলে।