চিনকে চাপে রাখতে জাপান, আমেরিকার সঙ্গে কৌশলগত পদক্ষেপ ভারতের, আমন্ত্রণ অস্ট্রেলিয়াকেও

আমাদের ভারত, ১০ জুলাই : লাদাখ সংঘাতের আবহেই ভারত মহাসাগরে জাপানের সাথে যৌথ নৌসেনা মহড়া করেছে ভারত। এবার চিনকে কৌশলে চাপে রাখতে জাপান আমেরিকার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়াকেও নৌমহড়ায় যোগদানের আমন্ত্রণ জানাতে পারে নয়া দিল্লি।

আর এই শক্তির চতুর্দশীয় অক্ষ বা কোয়াডকে সামরিক চেহারা দেওয়ার লক্ষ্যে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছিল আগেই। এখন সীমান্ত উত্তেজনার পরিস্থিতি আবারো সেই লক্ষ্যে এগোচ্ছে ভারত। তাই মালাবার বার্ষিক নৌসেনা মহড়ায় আমেরিকা ও জাপানের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়াকেও আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে নয়া দিল্লি বলে সূত্রের খবর।

এবছরের শেষেই বঙ্গোপসাগরের মালাবার বার্ষিক নৌ-মহড়ায় অংশ নিতে পারে ভারত জাপান অস্ট্রেলিয়া আমেরিকা। জানা গেছে আগামী সপ্তাহে এই নৌ-মহড়ার জন্য অস্ট্রেলিয়াকে নিমন্ত্রণ পাঠানো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

লাদাখে চিনা তৎপরতা বাড়ার পরেই ভারত মহাসাগরে জাপানের সঙ্গে নৌ-মহড়ার করে ভারত। জাপান জানিয়েছিল সেটি কোনরকম যুদ্ধের প্রস্তুতি নয় বরং দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়া বাড়াতেই এই মহড়া হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে চিনের সঙ্গে এই সংঘাত আবহে জাপানকে পাশে নিয়ে সামরিক মহড়া যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ ভূমি অধিকার নিয়ে ভারতের মতো চিনের সঙ্গে সংঘাত রয়েছে জাপানেরও।

মালাবারে ভারত-আমেরিকার মধ্যেই নৌ-মহড়া হওয়ার কথা ছিল। পরে জাপানের যোগ দেয় মহড়ায়। এর আগে ২০১৭ সালে ভারত জাপান আমেরিকা ত্রিপাক্ষিক নৌ-মহড়া হয়েছিল বঙ্গোপসাগরে। তার নাম ছিল মালাবার ২০১৭।

শুধু ভারত সাগর নয় বঙ্গোপসাগরেও চিনা নৌসেনার দৌড়াত্ম চোখে পড়েছে। তাই যদি যুদ্ধ লাগে তাহলে চিনা ডুবো জাহাজ অবশ্যই চিন্তার বিষয়। কারণ চিনারা চোরাগোপ্তা হামলাতেই বেশি অভ্যস্ত।

তাই মালাবার এক্সারসাইজ হবে বঙ্গোপসাগরে। সেখানে ডুবো জাহাজের যুদ্ধ কৌশলই বিশেষ করে অনুশীলন করা হবে। ভারত- প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের একাধিপত্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অশান্তি চলছে। লাদাখ সংঘাতের আগেই ভারত মহাসাগরে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী চিনা যুদ্ধ জাহাজের আনাগোনা চোখে পড়েছিল। সম্প্রতি ভারতে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনারও বলেছেন “বেজিং জল-সন্ত্রাসের প্রস্তুতি নিচ্ছে, আধিপত্য কায়েমের চেষ্টা চালাচ্ছে, তাদের উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে।”

চলতি বছরের শুরুতেই ভারত মহাসাগরের বিশেষ ব্যবসায়ী এলাকায় আঞ্চলিক জলসীমার কাছাকাছি বেশকটি চিনা জাহাজকে ঘুরতে দেখা গিয়েছিল। বেজিং তাতে পাল্টা দাবি করেছিল জলদস্যু দমনে এই জাহাজগুলোকে নামানো হয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় নৌসেনার নজরদারি বিমানে ধরা পড়ে চিনা জাহাজ গুলিকে ঘিরে রেখেছে পিএলএ-র যুদ্ধজাহাজ। তবে ভারত মহাসাগরের ভারতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা বরাবরই বেজিংয়ের নজরে। কারণ এর আগে বেশ কয়েকবার বিশেষ এলাকায় আঞ্চলিক জলসীমার কাছাকাছি ঘোরাফেরা করেছে চিনের একাধিক রণতরী। মাঝেমধ্যেই নজর এড়িয়ে হানা দিয়েছে চিনা সাবমেরিন। গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে ২০১৩ থেকে এখনো পর্যন্ত ভারত মহাসাগরে আরো বেশি ডুবোজাহাজ পাঠিয়েছে চিন। যার মধ্যে পরমাণু শক্তিচালিত আক্রমণকারীর ডুবোজাহাজে ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *