আমাদের ভারত, ২২ জুন: এতদিন সীমান্তে উত্তেজনা চরমে উঠলো দু’দেশের কোন পক্ষই একে অপরের উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেনি কিংবা গোলাগুলি ছোঁড়েনি। কিন্তু সম্প্রতি গালওয়ানে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে দশক ব্যাপী চলে আসা এই নিয়ম পাল্টাতে চলেছে ভারতীয় সেনা। লাদাখ সংঘর্ষের পর লাইন অব একচুয়াল কন্ট্রোলে অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে গোলাবর্ষণ ও গুলি ছোড়ার জন্য জওয়ানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেনার তরফে। সর্বদল বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছিলেন, “পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারে সেনা। ভারতীয় সেনাকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরই সেনা তরফের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় অস্ত্র আইনে এই বদল যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।”
১৯৯৬ ও ২০০৫ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার দুদিকে দু’কিলোমিটারের মধ্যে কোনো পক্ষই গোলাবর্ষণ করেনি বা গুলি ছোড়েনি। কিন্তু পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনের আগ্রাসনের কারণে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। তাতে ২০ জন ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যুর পর কঠোর মনোভাব নিতে শুরু করেছে ভারত।
গত সোমবারের সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান শহীদ হয়েছেন । এছাড়াও কমপক্ষে ৭৬ জন আহত হয়েছেন। লোহার রডের মধ্যে পেরেকের কাটা লাগানো এক অদ্ভুত অস্ত্র দিয়ে ভারতীয় জওয়ানদের আঘাত করেছে চিনাসেনা বলে সূত্রের খবর। তবে এর পাল্টা জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনাও। তাতে ৪৫ জন চিনাসেনা নিহত হয়েছে।
লাদাখ সংঘর্ষের পর ভারত ও চিনের মধ্যে প্রবল উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। দেশজুড়ে চিনাপণ্য বয়কটের ডাক উঠেছে। চিনের সাথে সমস্ত ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবিতে সরব হয়েছে দেশবাসী। এই পরিস্থিতিতে সীমান্তে যদি কোনরকমের অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করে চিন তাহলে গোলাবর্ষণ বা গুলি ছুড়তে অনুমতি দেওয়া হয়েছে সেনাকে। এখন বাহিনীর অন্যতম লক্ষ্য জাওয়ানদের মনোবলে যাতে কোনোভাবেই ফাটল না দেখা দেয়।
ভারতীয় সেনার এই সিদ্ধান্তে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন চিনা সরকারি মুখপাত্র গ্লোবাল টাইমসের এডিটর-ইন-চিফ হু শিনজিং। তিনি টুইট করে লিখেছেন, “যদি এটা সত্যি হয়,তাহলে এটা হবে গুরুতর চুক্তি লংঘন। আর ভারতকে এর কড়া মূল্য দিতে হবে।”