পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর প্রদেশে সিএএ বিরোধী হিংসাত্মক আন্দোলনে নেতৃত্বে পি এফ আই! সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার দাবি

আমাদের ভারত,১ জানুয়ারি: সিএএ–র প্রতিবাদে হিংসাত্মক বিক্ষোভের পরিকল্পনা ও নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে নিষিদ্ধ হতে পারে মুসলিম পন্থী সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া বা পি এফ আই। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ সূত্রে খবর পিএফআইকে নিষিদ্ধ করার আর্জি জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের চিঠি লেখা হয়েছে। সংগঠনের নেতারা ঘটনার দায় অস্বীকার করেছেন। অন্যদিকে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, উত্তর প্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জায়গায় বিক্ষোভের পেছনে ছিল পি এফ আইয়ের নেতৃত্ব।

সিএএ–এর প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা উত্তরপ্রদেশ। হিংসাত্মক বিক্ষোভের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় গোটা রাজ্যে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতেই শুরু হয় তদন্ত। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ও গোয়েন্দাদের দাবি, উত্তরপ্রদেশের বেশিরভাগ জায়গাতেই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছে পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া। পরিকল্পিতভাবেই ভাঙ্গচুর অগ্নিসংযোগ ও পুলিশের উপর আক্রমণ, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করেছে এই সংগঠনের সদস্যরা। আর সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে এবার ওই সংগঠনকে উত্তরপ্রদেশের নিষিদ্ধ করার আর্জি জানিয়ে চিঠি দিল যোগী সরকার।

উত্তরপ্রদেশের ডিজি ওপি সিং বলেন, হিংসাত্মক বিক্ষোভে সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগে ওই সংগঠনের উত্তরপ্রদেশের প্রধান ওয়াসিম সহ ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের জেরা করে ও অন্যান্য গোয়েন্দা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এই দাবি জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য বলেন, সিএএ বিরোধী মিছিলে বড় আকারের ক্ষয়ক্ষতির পেছনে ছিল পিএফআই–এর হাত। তাই এই ধরনের সংগঠনকে কোনওভাবেই বাড়তে দেওয়া যায় না। পিএফআইকে তিনি জঙ্গি সংগঠন সিমির সঙ্গে তুলনা করেন।

কিন্তু পিএফআই পুলিশের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, সিএএ এর বিরুদ্ধে যেভাবে প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে উঠেছে স্বাধীনতার পর এত বড় কোনও আন্দোলন হয়নি। তাদের অভিযোগ, বিজেপি শাসিত রাজ্যের দমন-পীড়ন চলছে।

অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের উলুবেড়িয়া, বেলডাঙা, সূতি, রেজিনগর, মালদহের বিভিন্ন প্রান্তে সিএএর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ সংগঠিত হয়। ট্রেন জ্বালিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে ব্যাপক সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হয়। এই বিক্ষোভের নেতৃত্বেও ছিল পিএফআই। এমনই তথ্য উঠে এসেছে গোয়েন্দাদের তদন্তে। যদিও সংগঠনের দাবি, এই বিক্ষোভ ছিল স্বতঃস্ফুর্ত। ওই বিক্ষোভের সংগঠনের কাউকে দেখা গেলেও তারা ব্যক্তিগত ভাবে অংশ নিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তারা। কিন্তু কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও রাজ্যের গোয়েন্দারা স্বীকার করে নিয়েছেন এই তান্ডব পরিকল্পিত এবং সংগঠিত ভাবেই হয়েছে, কোনোভাবেই তা অনিয়ন্ত্রিত ছিল না। ওই তাণ্ডবের পর এক শীর্ষ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দার ব্যাখ্যা, যে ক’টি জায়গায় বড় অশান্তি হয়েছে সবকটি শুরু হয়েছে প্রায় একই সময় বিকেল তিনটের সামান্য আগে পরে। এক জায়গার গন্ডগোল শুরু হলে সেই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর অন্য জায়গায় গন্ডগোল হয়। কিন্তু এখানে তা নয়, ঠিক একই সময়ে সবকটি বিক্ষোভ গন্ডগোল ঘটনা ঘটে। আরও একটি বিষয় চোখে পড়ার মতন মিল খুঁজে পেয়েছেন রাজ্যের গোয়েন্দারা। তাদের এক কর্তা বলেন, কোনও জায়গায় কোনও রাজনৈতিক দল বা ইসলামিক সংগঠনের পতাকা ব্যানার-ফেস্টুন ব্যবহার করা হচ্ছে না। জাতীয় পতাকা সামনে রেখে অবরোধ করা হচ্ছ। অবরোধকারীদের কয়েকজনের হাতে থাকছে কালো পতাকা। আর এইসব মিল দেখে গোয়েন্দাদের সূত্র মারফত পাওয়া খবর এবং আন্দোলনের গতি প্রকৃতি বিশ্লেষণ করার পর গোয়েন্দারা নিশ্চিত হন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হিংসাত্মক বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছিল এই পি এফ আই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *