শ্রমিক মালিক অসন্তোষের জেরে বন্ধ হয়ে গেল জগদ্দলের জেজেআই জুটমিল, কর্মহীন হল চার হাজার শ্রমিক

আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ১৪ জানুয়ারি: শ্রমিক মালিক অসন্তোষের জেরে বন্ধ হয়ে গেল জগদ্দলের জেজেআই জুটমিল। কর্মহীন হয়ে গেলেন স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় চার হাজার শ্রমিক।

সূত্রের খবর, গত দুদিন ধরে মিলের স্থায়ীকরণের জন্য আন্দোলন করছিল মিলের মেট্রোল বিভাগের শতাধিক অস্থায়ী কর্মী। এই বিভাগে কর্মরত শ্রমিকরা প্রায় দুই বছর ধরে অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে। তাদের কোন পিএফ বা ইএসআই’য়ের সুবিধা নেই। তাই তারা আন্দোলন শুরু করে। শুক্রবার সকালে আন্দোলনকারী শ্রমিকরা মিলের ভেতরে ভাঙ্গচুর চালায় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ মিল কর্তৃপক্ষ এদিন সকাল এগারোটা থেকে মিল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং চালু মিল থেকে সমস্ত শ্রমিকদের বের করে দেয়। এই ঘটনায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয় মিল চত্বরে। গন্ডগোলের খবর পেয়ে মিলে আসে পুলিশ। মিলে ভাঙ্গচুর চালানোর অভিযোগে পুলিশ চারজনকে আটক করে। এই ঘটনায় মিলের গেটের বাইরে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা।
উত্তেজনা থাকায় মিলের গেটে মোতায়ন করা হয় ভাটপাড়া থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। মিল যাতে খুলে যায় তাই মিলের আধিকারিকদের সাথে কথা বলতে আসেন জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম।

যদিও জানা গিয়েছে, মিলের আধিকারিকরা বিধায়কের সাথে কথা বলতে রাজি হননি। প্রায় ঘন্টা খানেক অপেক্ষা করে কোনো আলোচনা না করে ফিরে যান বিধায়ক।

এদিন বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে এই মিলের অস্থায়ী শ্রমিকদের স্থায়ী করা হচ্ছে না আর এই দাবি নিয়ে মিল কর্তৃপক্ষকে বলা সত্বেও তারা কিছু করছিল না। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকার জুটের দাম বেঁধে দেওয়ায় মিল মালিকদেরও অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমরা সব সময় এদের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। কিন্তু রাজ্য সরকার বলেছে সব শ্রমিকদের স্থায়ী করতে যাতে এদের পিএফ, ইএসআই সব চালু হয়। কিন্তু এই মিল কর্তৃপক্ষ সেরকম ব্যবস্থা করছে না। তাই অস্থায়ী শ্রমিকরা এর বিরোধিতা করে স্থায়ী করার দাবি করেন। আর সেই দাবি করায় মিল কর্তৃপক্ষ চক্রান্ত করে মিলটা বন্ধ করে দিল। আমরা এই বিষয়টা মন্ত্রী সাহেবকেও জানিয়েছি। খুব শীঘ্রই একটা বৈঠক হবে আর দ্রুত এই মিলটি খোলার ব্যবস্থা করা হবে।”

করোনা পরিস্থিতির মধ্যে মিল বন্ধ হওয়ায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে মিলে কর্মরত শ্রমিকদের ভবিষ্যত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *