মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগেই আসানসোলের পুর প্রশাসকের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি

রাজেন রায়, কলকাতা, ১৭ ডিসেম্বর: দলের একের পর এক নেতৃত্ব বেসুরো হওয়ায় ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে তৃণমূলকে। আসানসোলকে স্মার্ট সিটি বানানোর জন্য বরাদ্দ অর্থ না পাওয়ায় পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে ক্ষোভ জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন আসানসোলের প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। কিন্তু সেই চিঠির অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন ফিরহাদ। বিষয়টি নিয়ে তিনি জিতেন্দ্রর সঙ্গে বসার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন জিতেন্দ্র। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে তার আগেই বৃহস্পতিবার আসানসোলের পুর প্রশাসকের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি।

শুধু পুর প্রশাসকের পদ নয়, জিতেন্দ্র তিওয়ারি পদত্যাগ করলেন তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতির পদ থেকেও। যদিও এখনও তিনি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেননি। তবে তিনি জানিয়েছেন, দল যদি নির্দেশ দেয়, তাহলে বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দিতে আপত্তি নেই। শহরবাসীর কাছে তাঁর আবেদন, ‘যাঁরা আসানসোলকে ভালোবাসেন, তাঁদের পক্ষে থাকুন। অধিকারের জন্য লড়াই করুন।’

২০১৫ সালে দেশজুড়ে স্মার্টসিটি প্রকল্প ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্র এবং রাজ্যের তরফে যৌথভাবে এই প্রকল্প হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই প্রকল্পে যোগ দেয়নি রাজ্য। পুরমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে আসানসোলের বিদায়ী মেয়র অভিযোগ করেন, ‘কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক আসানসোলকে স্মার্ট সিটি প্রকল্পের জন্য বেছে নেয়। আপনারা অনুমতি দিলে শহরের উন্নয়নে ২ হাজার কোটি টাকা আসত। রাজনৈতিক কারণে সরকার ছাড়পত্র না দেওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্যও আসানসোল কেন্দ্রের কাছ থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা পেতে পারত যা আপনারা অনুমতি দেননি বলে পাওয়া যায়নি। আসানসোলের সঙ্গে অন্যায় হয়েছে।”

এই পরিস্থিতিতে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ থেকে তিনি ফোন করেন জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন আসানসোলের বিদায়ী মেয়র। উত্তরবঙ্গ সফর থেকে ফিরে শুক্রবার কলকাতায় জিতেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সেই বৈঠকের আগে বৃহস্পতিবার আসানসোলের পুর প্রশাসক, এমনকী তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেন জিতেন্দ্র। বিশেষত কে কখন ইস্তফা দিয়ে দিচ্ছেন, তা নিয়ে রীতিমতো রাজনৈতিক ত্রাস এখন তৃণমূলের অন্দরে।

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here