মুখ ঢেকে হামলা জেএনইউ ক্যাম্পাসে, মাথা ফেটে রক্তাক্ত ছাত্রসংসদের সভানেত্রী ঐশী সহ একাধিক পড়ুয়া,অধ্যাপক

আমাদের ভারত,৫ জানুয়ারি: আজ সন্ধে ৬টা নাগাদ দিল্লির জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এবং একাধিক ছাত্রীদের হোস্টেলে ঢুকে চূড়ান্ত তাণ্ডব চালালো মুখোশধারী কমপক্ষে ৫০-৬০ জনের দুষ্কৃতীদল। বেধড়ক মারধর করা হয়েছে ছাত্র ও অধ্যাপকদের। দুষ্কৃতীদের মারে মাথা ফেটেছে জেএনইউ ছাত্রসংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষের। তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে দিল্লির এইমসের ট্রমা কেয়ার ইউনিটে। হামলার ঘটনায় অভিযোগের তীর এবিভিপি দিকে।

সন্ধে সাড়ে ছটা নাগাদ মুখোশ, মাফলার এবং টুপি দিয়ে মুখ ঢেকে ক্যাম্পাসে ঢোকে কমপক্ষে ৫০-৬০ জনেরও বেশি দুষ্কৃতী। তাদের হাতে ছিল লাঠি, রড ইত্যাদি।

দুষ্কৃতীরা ক্যাম্পাসে ঢোকামাত্রই তীব্র চিৎকার শুরু হয় চারিদিকে। প্রাণ বাঁচাতে দৌড়াতে শুরু করেন ছাত্রছাত্রীরা। হোস্টেলের প্রতিটি ঘরে ঢুকে ঢুকে মারধর ভাঙ্গচুর করে হামলাকারীরা, বলে অভিযোগ। এবিভিপির দিকে অভিযোগের আঙুল উঠলেও এবিভিপি এই হামলার পেছনে বাম ছাত্রদেরকেই পাল্টা অভিযুক্ত করেছে।

আচমকা এই ভয়াবহ হামলায় অন্ধকারে শুরু হয়ে যায় প্রবল গন্ডগোল। ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছেন একাধিক অধ্যাপক অধ্যাপিকা। তার মধ্যে রয়েছেন একজন বাঙালি অধ্যাপিকা সুচরিতা সেন। অধ্যাপক অশোক সুদ জানিয়েছেন পাথর ছুড়তে ছুড়তে হামলাকারীরা হোস্টেলে ঢুকে পড়ে। তারপর শুরু হয় তাণ্ডব ভাঙ্গচুর। বড় বড় ইট পাথরের আঘাতে হোস্টেলের একাধিক অংশ ভাঙ্গা হয়। গুঁড়িয়ে দেয়া হয় একাধিক গাড়ি। দুষ্কৃতীদের হাতে রক্তাক্ত বাঙালি মেয়ে ঐশী সংবাদমাধ্যমকে জানান মুখোশ পড়ে আমাদের উপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। নির্মমভাবে আমায় মারধর করা হয়েছে।

মূলত দীপাবলীর পর থেকেই হোস্টেলের ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন করছিল পড়ুয়ারা। বাম ছাত্রসংগঠনের অভিযোগ আন্দোলন বন্ধ করার জন্য একাধিকবার হুমকি দিয়েছে এবিভিপি।

হামলার নিন্দা করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিনি বলেছেন, জেএনইউ ছাত্র সভাপতির ওপর এহেন হামলার খবরে আমি আশ্চর্য। পুলিশের উচিত এক্ষুনি উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া। ক্যাম্পাসের ভেতরে যদি পড়ুয়ারা নিরাপদ না থাকে তাহলে দেশের উন্নয়ন অসম্ভব।

এদিকে হামলার ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে উপস্থিত হয় বিশাল পুলিশবাহিনী। ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গেটের বাইরে উপস্থিত দিল্লির অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ এলেও তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। পুলিশের সামনেও তান্ডব চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *