রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী জ্যোৎস্না রানী বর্মনকে ৪ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা ফেরত দেবার নির্দেশ উচ্চ আদালতের

স্বরূপ দত্ত, আমাদের ভারত, উত্তর দিনাজপুর,
১৮ মার্চ: একশোর দিনের প্রকল্পে চুড়ান্ত দুর্নীতির অভিযোগ। অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মনের স্ত্রী তথা পঞ্চায়েত প্রধান জ্যোৎস্না রানী বর্মনকে ৪ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা ফেরত দেবার নির্দেশ দিল উচ্চ আদালত। এই ঘটনা ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলাজুড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ ব্লকের জগদীশপুর অঞ্চলের খাঁড়ি সরিয়াবাদ এলাকায়।

প্রসঙ্গত, এমজিএন আর ইজিএস বা (একশো দিনের) প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে রাজ্যে এসেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারি সংস্থা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারি সংস্থা শনিবার এই তদন্ত করতে উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহার ব্লকে আসেন। এদিকে এই একশো দিনের প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়েছিলেন খোদ তৃণমূল কংগ্রেসের মাইনোরিটি সেলের জগদীশপুর অঞ্চল সভাপতি মেহেতাব আলী। তাঁর অভিযোগ, এই পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান জ্যোৎস্না রানী বর্মনের বিরুদ্ধে। মেহেতাব আলীর অভিযোগ ছিল, জগদীশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে একশো দিনের প্রকল্পে ২১টি পুকুর খনন বাবদ প্রায় ২২ লক্ষ টাকা সরকারি অর্থ খরচ দেখানো হলেও বাস্তবে পুকুর না কেটেই টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এই আর্থিক তছরূপের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যুক্ত আছেন রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মনের স্ত্রী জ্যোৎস্না রানী বর্মন।

জগদীশপুর অঞ্চলের মাইনোরিটি সেলের সভাপতি মেহেতাব আলী লিখিতভাবে উত্তর দিনাজপুরের জেলা শাসক সহ জেলা প্রশাসনের পদস্থ কর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। প্রশাসন সেই অভিযোগের গুরুত্ব না দেওয়ায় তারা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। উচ্চ আদালত উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের কাছে তদন্ত করে রিপোর্ট দেবার নির্দেশ দিয়েছিল। উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন খাড়ি সরিয়াবাদ গ্রামের তিনটি পুকুর খননের তদন্ত করে আদালতে রিপোর্ট পেশ করেন। আদালত সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে পঞ্চায়েত প্রধানকে ৪ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা ফেরত দেবার নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের এই নির্দেশেও খুশী নন অভিযোগকারী মেহেতাব আলী। তাঁর দাবি, তিনটি নয় একুশটি পুকুরের তদন্ত রিপোর্ট আদালতের কাছে পেশ করতে হবে। দুর্নীতির অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় মন্ত্রীর স্ত্রী জ্যোৎস্না রানী বর্মনকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এবিষয়ে উত্তর দিনাজপুর প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বিষয়টিকে প্রকাশ্যে আনেন মেহেতাব।

অন্যদিকে প্রধান জ্যোৎস্না রানীর স্বামী তথা রাজ্যের মন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মন জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ তিনি হাতে পাননি। নির্দেশ পেলে পরবর্তি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। তবে জগদীশপুর অঞ্চলটি বন্যা প্রবন এলাকা। ২০১৮ সালে পুকুর খনন হয়েছিল। পুকুর মাপা হল ২০২৩-এ। বন্যার সময় পলি জমে পুকুরের নাব্যতা কমিয়ে দেয়। দীর্ঘ কয়েক বছর পর পুকুরের মাপ হওয়ায় সঠিক তথ্য না পাওয়ায় আদালত এধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে সত্যজিৎবাবু জানিয়েছেন। পাশাপাশি অভিযোগকারী মেহেতাবের বিরুদ্ধেও বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন মন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *