তীর্থে তীর্থে পথে পথে, কামাখ্যা দর্শন (ত্রয়োদশ পর্ব)

স্বামী প্রৌঢ়ানন্দ
আমাদের ভারত, ২৬ ডিসেম্বর: এবার ফেরার পালা। আজ বিকেলেই ট্রেন। এরপর আবার কবে এখানে আসতে পারব, মা আবার কবে কৃপা করে ডাক দেবেন তাও জানি না, তাই সকাল হতে না হতেই আর একবার মন্দিরের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
মায়ের মন্দিরে বাইরে থেকে প্রনাম করে এক জায়গায় বসলাম, মনে বাসনা এক জায়গায় বসে খানিকক্ষণ জপ করব। কতক্ষণ জপে আছি খেয়াল নেই হঠাৎ মনে হল কেউ যেন আমায় আকর্ষণ করছে। আসন থেকে উঠে মন্ত্র মুগ্ধের মতন চলতে শুরু করলাম। মন্দির থেকে বেরিয়ে বামদিকে জঙ্গলের পথ ধরলাম। বেশ খানিকটা হাঁটার পর দেখলাম একটা গাছের তলায় শিব-দুর্গার পাথরের মূর্তি, তাতে সিদুর লাগানো, আর তার পাশেই এক বিরাট প্রস্তরখণ্ডের উপর বসে রয়েছেন কালকের দেখা সেই তান্ত্রিক সন্ন্যাসী।

সন্ন্যাসী আমায় দেখে মুচকি হেসে বললেন, কিরে মাকে ছেড়ে যেতে মন চাইছে না, তাই আজ আবার এসেছিস মায়ের সাথে দেখা করতে। বেশ করেছিস, তা বেশ করেছিস। মায়ের উপর যত টান বাড়বে, মাও ততই তোকে কাছে টেনে নেবেন। আমি সন্ন্যাসী মহারাজকে বললাম, বাবা আপনি কি আমাকে আকর্ষণ করলেন, আমি কেমন যেন মন্ত্র মুগ্ধের মতন এখানে চলে এলাম। সাধুবাবা হেসে বললেন, হ্যাঁ রে বেটা হ্যাঁ, ধ্যানে বসে দেখলাম তুই এখন মন্দিরে বসে জপ করছিস, মায়ের আশীর্বাদে তুই ধ্যানসিদ্ধ হয়েছিস, তোর জপ না ভাঙ্গালে আজকের ফেরার ট্রেন তোর ধরা হবে না, আর তুইও বিপদে পড়বি। তোর হাতে আর একদম বেশি সময় নেই, এখান থেকে সোজা স্টেশনে চলেযা। তোর সাথীরা তোর জিনিষপত্র নিয়ে স্টেশনে চলে যাবে। সন্ন্যাসী মহারাজের এই অযাচিত করুনায় আমার দু’চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে এল। মহারাজের পা দুটো জড়িয়ে ধরে বললাম, বাবা আপনি আমায় কৃপা করুন। মহারাজ হেসে বললেন কৃপা করার আমি কে, মা তোকে কৃপা করেছেন। এখন যা তাড়াতাড়ি স্টেশনে চলে যা, তোর সাথিরা তোকে দেখতে না পেয়ে দুঃশ্চিন্তা করছে।মহারাজজীকে প্রনাম করে রওনা দিলাম স্টেশনের উদ্দেশ্যে।

ট্রেন ছাড়ার মিনিট দুয়েক আগে স্টেশনে পৌঁছলাম। আমায় দেখতে পেয়ে আমার সঙ্গীরা হাঁপ ছেড়ে বাঁচল। তারা আমায় জানালো, একজন এসে আমাদের বলে গেলেন আপনি মন্দির থেকে বেরিয়ে সোজা স্টেশনে চলে যাবেন তাই আমরা যেন আপনার জিনিষপত্র গুলি নিয়ে স্টেশনে চলে যাই। সঙ্গীদের কাছে আর ব্যাপারটা খোলসা করলাম না। ট্রেন ছেড়ে দিল, প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এল।গতিই জীবন আর গতি হীনতাই হল মৃত্যু, তাই ফিরে গিয়ে গতির কোলেই নিজেকে সমর্পণ করতে হবে, গতিধারায় নিজেকে যোগযুক্ত করে সঞ্চয় করতে হবে পরম পথের পাথেয়।

।। সমাপ্ত ।।

॥ কামাখ্যা কবচম্ ধ্যানং চ ॥

কামাখ্যা ধ্যানম্ রবিশশিয়ুতকর্ণা কুংকুমাপীতবর্ণা মণিকনকবিচিত্রা লোলজিহ্বা ত্রিনেত্রা। অভয়বরদহস্তা সাক্ষসূত্রপ্রহস্তা প্রণতসুরনরেশা সিদ্ধকামেশ্বরী সা॥
অরুণকমলসংস্থা রক্তপদ্মাসনস্থা নবতরুণশরীরা মুক্তকেশী সুহারা। শবহৃদি পৃথুতুঙ্গা স্বাঙ্ঘ্রিয়ুগ্মা মনোজ্ঞা শিশুরবিসমবস্ত্রা সর্বকামেশ্বরী সা॥
বিপুলবিভবদাত্রী স্মেরবক্ত্রা সুকেশী দলিতকরকদন্তা সামিচন্দ্রাবতংসা। মনসিজ-দৃশদিস্থা য়োনিমুদ্রালসন্তী পবনগগনসক্তা সংশ্রুতস্থানভাগা। চিন্তা চৈবং দীপ্যদগ্নিপ্রকাশা ধর্মার্থাদ্যৈঃ সাধকৈর্বাঞ্ছিতার্থা॥
কামাখ্যা-কবচম্ ওঁ কামাখ্যাকবচস্য মুনির্বৃহস্পতিঃ স্মৃতঃ। দেবী কামেশ্বরী তস্য অনুষ্টুপ্ছন্দ ইষ্যতে॥
বিনিয়োগঃ সর্বসিদ্ধৌ তঞ্চ শৃণ্বন্তু দেবতাঃ। শিরাঃ কামেশ্বরী দেবী কামাখ্যা চক্ষূষী মম॥
শারদা কর্ণয়ুগলং ত্রিপুরা বদনং তথা। কণ্ঠে পাতু মাহামায়া হৃদি কামেশ্বরী পুনঃ॥
কামাখ্যা জঠরে পাতু শারদা পাতু নাভিতঃ। ত্রিপুরা পার্শ্বয়োঃ পাতু মহামায়া তু মেহনে॥
গুদে কামেশ্বরী পাতু কামাখ্যোরুদ্বয়ে তু মাম্। জানুনোঃ শারদা পাতু ত্রিপুরা পাতু জঙ্ঘয়োঃ॥
মাহামায়া পাদয়ুগে নিত্যং রক্ষতু কামদা। কেশে কোটেশ্বরি পাতু নাসায়াং পাতু দীর্ঘিকা॥
ভৈরবী (শুভগা) দন্তসঙ্ঘাতে মাতঙ্গ্যবতু চাঙ্গয়োঃ। বাহ্বোর্মে ললিতা পাতু পাণ্যোস্তু বনবাসিনী॥
বিন্ধ্যবাসিন্যঙ্গুলীষু শ্রীকামা নখকোটিষু। রোমকূপেষু সর্বেষু গুপ্তকামা সদাবতু॥
পাদাঙ্গুলী পার্ষ্ণিভাগে পাতু মাং ভুবনেশ্বরী। জিহ্বায়াং পাতু মাং সেতুঃ কঃ কণ্টাভ্যন্তরেঽবতু॥
পাতু নশ্চান্তরে বক্ষঃ ঈঃ পাতু জঠরান্তরে। সামীন্দুঃ পাতু মাং বস্তৌ বিন্দুর্বিন্দ্বন্তরেঽবতু॥
ককারস্ত্বচি মাং পাতু রকারোঽস্থিষু সর্বদা। লকারঃ সর্বনাডিষু ঈকারঃ সর্বসন্ধিষু॥
চন্দ্রঃ স্নায়ুষু মাং পাতু বিন্দুর্মজ্জাসু সন্ততম্। পূর্বস্যাং দিশি চাগ্নেয়্যাং দক্ষিণে নৈরৃতে তথা॥
বারুণে চৈব বায়ব্যাং কৌবেরে হরমন্দিরে। অকারাদ্যাস্তু বৈষ্ণব্যাঃ অষ্টৌ বর্ণাস্তু মন্ত্রগাঃ॥
পান্তু তিষ্ঠন্তু সততং সমুদ্ভববিবৃদ্ধয়ে। ঊর্দ্ধ্বাধঃ পাতু সততং মাং তু সেতুদ্বয়ে সদা॥ নবাক্ষরাণি মন্ত্রেষু শারদা মন্ত্রগোচরে। নবস্বরাস্তু মাং নিত্যং নাসাদিষু সমন্ততঃ॥
বাতপিত্তকফেভ্যস্তু ত্রিপুরায়াস্তু ত্র্যক্ষরম্। নিত্যং রক্ষতু ভূতেভ্যঃ পিশাচেভ্যস্তথৈব চ॥ তত্ সেতু সততং পাতু ক্রব্যাদ্ভ্যো মান্নিবারকম্ নমঃ কামেশ্বরীং দেবীং মহামায়াং জগন্ময়ীম্। য়া ভূত্বা প্রকৃতির্নিত্যা তনোতি জগদায়তম্॥
কামাখ্যামক্ষমালাভয়বরদকরাং সিদ্ধসূত্রৈকহস্তাং শ্বেতপ্রেতোপরিস্থাং মণিকনকয়ুতাং কুঙ্কমাপীতবর্ণাম্। জ্ঞানধ্যানপ্রতিষ্ঠামতিশয়বিনয়াং ব্রহ্মশক্রাদিবন্দ্যা- মগ্নৌ বিন্দ্বন্তমন্ত্রপ্রিয়তমবিষয়াং নৌমি বিন্ধ্যাদ্র্যতিস্থাম্॥
মধ্যে মধ্যস্য ভাগে সততবিনমিতা ভাবহারাবলী য়া লীলালোকস্য কোষ্ঠে সকলগুণয়ুতা ব্যক্তরূপৈকনম্রা। বিদ্যা বিদ্যৈকশান্তা শমনশমকরী ক্ষেমকর্ত্রী বরাস্যা নিত্যং পায়াত্ পবিত্রপ্রণববরকরা কামপূর্বেশ্বরী নঃ॥
ইতি হরেঃ কবচং তনুকেস্থিতং শময়তি বৈ শমনং তথা যদি। ইহ গৃহাণ য়তস্ব বিমোক্ষণে সহিত এষ বিধিঃ সহ চামরৈঃ॥
ইতীদং কবচং য়স্তু কামাখ্যায়াঃ পঠেদ্বুধঃ। সুকৃত্ তং তু মহাদেবী তনু ব্রজতি নিত্যদা॥
নাধিব্যাধিভয়ং তস্য ন ক্রব্যাদ্ভ্যো ভয়ং তথা। নাগ্নিতো নাপি তোয়েভ্যো ন রিপুভ্যো ন রাজতঃ॥
দীর্ঘায়ুর্বহুভোগী চ পুত্রপৌত্রসমন্বিতঃ। আবর্তয়ন্ শতং দেবীমন্দিরে মোদতে পরে॥ য়থা তথা ভবেদ্বদ্ধঃ সঙ্গ্রামেঽন্যত্র বা বুধঃ। তত্ক্ষণাদেব মুক্তঃ স্যাত্ স্মারণাত্ কবচস্য তু॥

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *