আমাদের ভারত, ১৩ নভেম্বর: অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াতের ভিক্ষে স্বাধীনতা মন্তব্যকে ঘিরে এখন বিতর্কের ঝড়। অভিনেত্রীর পদ্মশ্রী প্রত্যাহার তথা তাকে গ্রেপ্তারের দাবি উঠেছে। তোলপাড় করা এই বিতর্কের মধ্যে অভিনেত্রী বললেন, পদ্ম সম্মান তিনি ফিরিয়ে দিতে রাজী, কিন্তু তার কিছু শর্ত রয়েছে। সেগুলি পূরণ হলেই তিনি পদক্ষেপ করতে প্রস্তুত।
পদ্ম সম্মান পাওয়ার পর এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রীর দাবি করেছিলেন, ভারত প্রকৃত স্বাধীনতা পেয়েছে ২০১৪ সালে যখন প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় এসেছে। তার মতে ১৯৪৭ সালে দেশ যে স্বাধীনতা পায় সেটা ছিল ভিক্ষা। এরপর থেকেই বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। বিরোধীরা দাবি করেন এমন মন্তব্যের জন্য কঙ্গনার পদ্মশ্রী কেড়ে নেওয়া হোক। তার বিরুদ্ধে মামলা রুজুর হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।
বিতর্কের ঝড় উঠতেই আত্মপক্ষ সমর্থনে পাল্টা জবাব দিতে সোশ্যাল মিডিয়াকে বেছে নিয়েছেন কঙ্গনা। টুইটারে তিনি নিষিদ্ধ তাই ইনস্টাগ্রামে নিজের বক্তব্য প্রকাশ করেছেন অভিনেত্রী। তিনি জানিয়েছেন, তিনি পদ্মশ্রী ফিরিয়ে দিতে রাজি। কিন্তু তার জন্য নির্দিষ্ট কিছু শর্ত রয়েছে। সেটা পূরণ করতে পারলেই তিনি ফিরিয়ে দেবেন পদ্ম সম্মান। ইতিহাস বইয়ের একটি পাতা তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা রয়েছে। তার কথায় ১৮৫৭ সালে প্রথমবার দেশ স্বাধীনতার জন্য একজোট হয়েছিল। সুভাষচন্দ্র বসু, রানী লক্ষ্মীবাঈ, বীর সাভারকারের কথা তিনি উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, “১৮৫৭ সালের কথা তিনি জানেন। কিন্তু ১৯৪৭ সালে কোন যুদ্ধ হয়েছে? তা আমি জানি না। যদি কেউ তা আমার নজরে আনতে পারেন তাহলে আমি আমার পদ্মশ্রী ফিরিয়ে দেব। ক্ষমাও চাইব। দয়া করে আমাকে এ বিষয়ে সাহায্য করুন।
নিজের বক্তব্যের সমর্থনে কঙ্গনা আরও যুক্তি দিয়ে লিখেছেন, “দক্ষিণপন্থী শক্তি উত্থানের সঙ্গে সঙ্গেই জাতীয়তাবাদের সূচনা হয়েছিল। কিন্তু সেটার এক আকস্মিক মৃত্যু হল কেন? কেন গান্ধী, ভগৎ সিংকে মরতে দিলেন? কেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে খুন করা হলো?–কখনো তাকে সমর্থন কেন করেননি গান্ধী। কেন দেশের লাইন অফ পার্টিশন টানলেন একজন শ্বেতাঙ্গ? স্বাধীনতা উদযাপনের বদলে কেন ভারতীয়রা একে অপরের প্রাণ নিতে শুরু করলেন? এসব প্রশ্নের উত্তর আমি খুঁজছি। আমাকে সাহায্য করুন।”
কঙ্গনা বলেন, আক্ষরিক অর্থে স্বাধীনতা দেশ হয়তো ১৯৪৭ সালে পেয়েছিল কিন্তু চেতনা ও বিবেকের স্বাধীনতা দেশ পেয়েছিল ২০১৪ সালে। তাঁর মতে ওই বছরই এক মৃত সভ্যতার জেগে উঠেছিল। এখন আর কাউকে ইংরেজি বলতে না পারার জন্য লজ্জিত হতে হয় না। ছোট শহর থেকে আসার জন্য লজ্জিত হয় না।