আমাদের ভারত, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ২৪ ডিসেম্বর: করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবার গঙ্গাসাগর মেলায় বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। একদিকে যেমন মেলায় ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে অত্যাধুনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে, তেমনি করোনা পরিস্থিতিতে যে সমস্ত পুন্যার্থীরা এবারের মেলায় আসতে পারবেন না তাঁদের জন্য গঙ্গাসাগরের জল, কপিলমুনির মন্দিরের প্রসাদ কুরিয়ারে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা রাখছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলার হেড কোয়াটার আলিপুরে গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন জেলাশাসক পি উল্গানাথান ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি সামিসা সেখ।
এবারের গঙ্গাসাগর মেলার ব্যবস্থাপনা নিয়ে জেলাশাসক জানান, গঙ্গাসাগর মেলায় জিপিআরএস পদ্ধতিতে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা হবে মেলা প্রাঙ্গনে। যার নাম দেওয়া হয়েছে পিলগ্রিম ট্রান্সপোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। দর্শনার্থীরা কোথায় কত সংখ্যক রয়েছেন, কোথায় কত বাস বা ভেসেল রয়েছে, কোথায় গেলে পুন্যার্থীরা সেগুলি ধরতে পারবেন সেই সমস্ত তথ্য এই বিশেষ ব্যবস্থার মাধম্যে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এছাড়াও একটি অ্যাপ চালু করা হয়েছে যার নাম দেওয়া হয়েছে অতিথি পথ। এই অ্যাপের মাধ্যমে গঙ্গাসাগর যেতে গেলে কোথায় কিভাবে কোন রুট থেকে শুরু করে কোথায় গাড়ি ধরতে হবে, কোথায় ভেসেল পাওয়া যাবে এছাড়াও কোনও দর্শনার্থী যদি অসুবিধায় পড়েন তা এই অ্যাপের মাধ্যমে জানানো যাবে।
এ বছর কোভিডের কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন জায়গায় স্যানিটাইজার, স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। যাদের পরীক্ষা হয়ে যাবে তাঁদের হাতে বিশেষ ব্যান্ড বেঁধে দেওয়া হবে, যা দেখে বোঝা যাবে ওনার শারীরিক পরীক্ষা হয়েছে। এছাড়াও মেলা গ্রাউন্ডে ল্যাবের ব্যবস্থাও থাকবে, কোনও মানুষের যদি জ্বর হয়, সে যদি সঙ্গে সঙ্গে কোভিড টেস্ট করতে চান সেখান থেকে করতে পারবেন। পাশাপাশি অ্যান্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থাও থাকছে গঙ্গাসাগর মেলায়। কেউ মেলায় এসে করোনা আক্রান্ত হলে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। এছাড়াও থাকছে নিরীক্ষণ ব্যবস্থা। বিভিন্ন জায়গায় নজরদারি চালানো হবে ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে। মেলায় নজরদারি চালানোর জন্য থাকছে ২৫টি ড্রোন ক্যামেরা ও এক হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা। পাঁচটি কন্ট্রোল রুম বাফার জোন করা হচ্ছে কোভিটের জন্য। এছাড়াও আরেকটি ব্যবস্থা চালু হচ্ছে যার নাম দেওয়া হয়েছে পরিচয়। হাতে রিস্টব্যান্ড বেঁধে দেওয়া হবে এবং তাতে কিউআর কোড থাকবে। বয়স্ক ও কম বয়সীদের জন্য এটা ফ্রী অফ কস্ট দেওয়া হবে। এছাড়াও মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক খারাপ হলে সাগর স্ন্যাচার অল্টারনেটিভ কলিং সিস্টেম ব্যবহার করা হবে।
আর যারা করোনা পরিস্থিতিতে মেলায় আসতে পারবেন না, বাড়িতে বসেই যদি মেলা দেখতে চান তাদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে দর্শন আউটডোর এন্ড ডিজিটাল মিডিয়া। তারা বাড়িতে বসেই অনলাইনে দেখতে পারবেন গঙ্গাসাগর মেলার বিভিন্ন বিষয়। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দেখতে পাবেন মেলার লাইভ কভারেজ। আর করোনা পরিস্থিতিতে ঘরে বসেই যারা গঙ্গাস্নান সারতে চান তাঁদের জন্য থাকছে বাড়িতে গঙ্গা জল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা।