করোনার মধ্যেই ছেলেধরার আতঙ্ক হিলিতে, নিখোঁজ পাঁচ শিশুকে খুঁজতে লকডাউন ভাঙলেন কয়েকশো গ্রামবাসী

আমাদের ভারত, বালুরঘাট, ৪ এপ্রিল: করোনার মধ্যেই ছেলেধরা আতঙ্কে উত্তেজনা বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী হিলিতে। বিকেল থেকে নিখোঁজ হওয়া পাঁচ শিশুকে মধ্যরাতে উদ্ধার করল পুলিশ। শুক্রবার বিকেল থেকে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ৫ শিশুকে মধ্যরাতে উদ্ধার করল পুলিশ। ঘটনায় অবাক এলাকার বাসিন্দারা। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি ব্লকের বিনশিরা গ্রাম পঞ্চায়েতের কালীতলা এলাকার। গোটা ঘটনায় আতঙ্কিত শিশুর পরিবার ও আশপাশের বাসিন্দারা খুঁজছেন রহস্যের গন্ধ। তদন্তে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বিনশিরার কালীতলা এলাকার বাসিন্দা নিতাই লাহার এবং মিলন বিশ্বকর্মার চার ছেলে শনিবার বিকেল থেকেই নিখোঁজ হয়ে যায়। প্রথমে বাড়ির লোকেরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করবার পর না পেতেই বিষয়টি জানাজানি হয় গোটা গ্রামে। শুরু হয় তুমুল হইচই পরিস্থিতি। দীর্ঘ রাত অবধি ওই চার শিশুর খোঁজ না পাবার পরেই তার পরিবারের লোকেরা ঘটনা জানিয়ে দ্বারস্থ হন হিলি থানার পুলিশের। যার পরেই সামনে আসে পার্শ্ববর্তী মাতাইশ গ্রামের বাসিন্দা হেমন্তী হাঁসদার এক ছেলের নিখোঁজ হবার কথাও। ঘটনাকে ঘিরে তুমুল চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয় এলাকায়। করোনার লকডাউনকে উড়িয়ে দিয়ে তিন চারটি গ্রামের কয়েকশো মানুষ টর্চ হাতে রাতভর রাস্তায় নামেন নিখোঁজ ওই পাঁচ শিশুকে উদ্ধারে। এদিকে এই ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় পৌছে বাসিন্দাদের সাথে শিশুদের খুঁজতে মাঠে নামে হিলি থানার পুলিশও। অবশেষে মধ্যরাতে গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে একটি খড়ের পালা থেকে উদ্ধার হয় ওই চার শিশু। যদিও অপর এক শিশুকে উদ্ধার করতে শনিবার ভোর রাত অবধি খোঁজাখুঁজি করতে হয়েছে হিলি পুলিশকে। ইটভাটার কাছে থাকা ট্রাক্টরের নীচ থেকে ওই শিশুটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। শুক্রবার বিকেল থেকে শনিবার ভোররাত পর্যন্ত এমন ঘটনায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকা জুড়ে। যদিও পুরো ঘটনা নিয়ে রহস্যের গন্ধ খুঁজে পাচ্ছেন ওই শিশুর পরিবারের লোকেরা। লকডাউনের সুযোগ নিয়ে ছেলেধরা চক্র কাজ করার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা।

শিশুদের পরিবারের তরফে হেমন্তী হাঁসদা ও রেনু লাহারা জানিয়েছেন, এমন ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেনি গ্রামে। প্রতিদিন বাড়িতেই খেলাধুলা করত এই শিশুরা। সন্ধ্যের পর বাড়ির বাইরে শিশুদের যাওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়। তার মধ্যে লকডাউনে প্রায় সকলেই ঘরবন্দি। এমন ঘটনায় তারা যথেষ্টই আতঙ্কিত। এর পিছনে কোনও অসাধু চক্র থাকার সম্ভবনা রয়েছে বলেই মনে করছেন তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা মিঠুন দাস বলেন, লকডাউনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কোনও অসাধু চক্র এমন কান্ড করে থাকতে পারে। তবে বাসিন্দাদের একত্রিত হওয়া ও পুলিশ প্রশাসনের সক্রিয় পদক্ষেপেই তাঁদের ফেলে পালিয়েছে ওই অসাধু চক্র বলেই মনে করছেন তারা। পুরো ঘটনাটি রহস্যে মোড়া রয়েছে গ্রামবাসীদের কাছে। এর আগে কখনো এমন ঘটনা দেখেননি তারা।

হিলি থানার ওসি তাসি থিরিং শেরপা জানিয়েছেন, পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে শিশুদের উদ্ধার করে ওইদিন রাতেই তাদের পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *