রাজ্যকে বিপদে ফেলতে জেনে শুনে দুই করোনা আক্রান্ত রোগীকে পাঠালো কেন্দ্রীয় সরকার: শুভেন্দু অধিকারী

আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ১৫ জুন: বিপদে ফেলতে করোনা আক্রান্ত দুই রোগীকে ইণ্ডিগো বিমানে করে জেনেশুনে পশ্চিমবঙ্গে পাঠালো কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় সরকার ও অসামরিক বিমান পরিবহন দপ্তরের বিরুদ্ধে এমন দায়িত্ব জ্ঞানহীন কাজের অভিযোগ তুললেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে এই বিষয়ে জানিয়েছেন এবং উচ্চ পর্যায়ে এর তদন্ত করে এর বিহিতের ব্যবস্থা করার কথা বলেন। না হলে উচ্চ আদালতে এর জন্য এলাকার বুদ্ধিজীবী মানুষ জন মামলা করবেন বলে জানালেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।

হঠাৎ করে সাত সকালে দুজন কভিড পজেটিভ রোগী পূর্ব মেদিনীপুরের বড়মা কোভিড হাসপাতালের গেটের সামনে ঘোরাঘুরি করতে থাকে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় ওরা সোজা এয়ারপোর্ট থেকে গাড়ি ধরে চলে এসেছে হাসপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তারা জানায় যে তারা করোনা আক্রান্ত রোগী। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হোক। হাসপাতালে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সাময়িক বিষয়টি শুনে হতবাক হলেও পরে তাদের ভর্তি করা হয়েছে।

এই বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারী জানান রোগী এসেছে নিজের থেকে চিকিৎসা কেন্দ্রে। তাতে কোন অসুবিধে নেই। কিন্তু তিনি যেটা বলতে চাইছেন সেটা হল ভারত সরকার আইসিএমআর ও অসামরিক বিমান পরিবহন দপ্তরের বিরুদ্ধে চরম দায়িত্ব জ্ঞানহীন কাজের অভিযোগ তুলেছেন। শুধু তাই নয়, তার বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকার জেনেশুনে এটা করেছে। আর যে দুই কোভিড ১৯ পজিটিভ রোগী তারাও জেনেশুনে ইণ্ডিগো ফ্লাইটে করে এলেন তারা ফ্লাইটে থাকা বাকি যাত্রী দেরও যে সংক্রমণ ঘটায়নি তার কি মানে আছে?
এর যথাপোযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ সহ পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। জনস্বার্থে এটা প্রচার করতে আজ মোবাইলে ভিডিও কলিং এর মাধ্যমে প্রেসমিট করলেন। তিনি আরো জানান, এই ঘটনার কথা উচ্চ পর্যায়ে জানানোর পাশাপাশি কোনও সদুত্তর না পেলে মহামান্য উচ্চ আদালতের দ্বারস্ত হবেন এলাকার শুভবুদ্ধি সম্পন্ন বহু মানুষ। শুভেন্দু অধিকারের দাবি, সম্পূর্ণ দায়িত্ব জ্ঞানহীন দায়সারা কাজ করছে বিমান বন্দরও। ইণ্ডিগো বিমানের নম্বর (৩৬৮৫)।

জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আক্রান্ত দুই যুবকের নাম ইন্দ্রজিত দোলই(২৬) ও স্বরূপ সামন্ত(২৩)। এদের একজনের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক এলাকায়। অন্যজনের তমলুক ব্লকের অনন্তপুর এলাকায়। এরা চেন্নাইতে একটি কারখানায় কাজ করতো। কারখানায় একজনের করোনা পজিটিভ হওয়ায় মালিক কারখানা বন্ধ করে দেয়। আক্রান্ত দুইজন সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা করতে চাইলে কোনও সিমটম না থাকায় সেখানে পরীক্ষা করা হয়নি। এরপর এরা বেসরকারিভাবে নিজেদের সোয়াব টেস্ট করায়। এদের সোয়াব কালেকশন করে ১২ জুন। এরপর আক্রান্তরা সহকর্মী আরো ৫ জনের সঙ্গে বিমানে কলকাতা ফেরার টিকিট কাটে চেন্নাই থেকে। ইতিমধ্যে ১৩ জুন এদের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে। তারপরও ওদের জন্য কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি তামিলনাড়ু সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকার। আক্রান্তরা দিব্যি জেনেশুনে ১৪ জুন অর্থাৎ গতকাল চেন্নাই থেকে দমদম এয়ারপোর্টে নামে। সেখান থেকে পাঁশকুড়া বড়মা হাসপাতালে যায়।

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাই চন্দ্র মন্ডল জানিয়েছেন, এই জেলায় আসা এই দুই করোনা আক্রান্তদের সঙ্গী আরো পাঁচজনকে খুজে বের করে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *