রাজেন রায়, কলকাতা, ১১ ডিসেম্বর: ২০১১-২০১৬ সাল পর্যন্ত উচ্চ প্রাথমিকে সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দিল হাইকোর্ট৷ নিয়োগের গোটা প্রক্রিয়া নতুন করে শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট৷ শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণ, দুর্নীতির অভিযোগে উঠেছিল এই সমস্ত শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া ৷ সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট৷ উচ্চপ্রাথমিকে প্যানেল থেকে শুরু করে মেধাতালিকা, সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেওয়ার ঘোষণা করেছে কলকাতা হাইকোর্ট৷
দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর ধরে থমকে রয়েছে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া। থমকে থাকায় মেধাতালিকায় অনিয়ম-সহ গুচ্ছ অভিযোগ তুলে দায়ের হয়েছিল হাইকোর্টে মামলা৷ আর তার জেরেই দীর্ঘদিন ধরেই নিয়োগ প্রক্রিয়ার ওপর জারি ছিল স্থগিতাদেশ৷ দীর্ঘ শুনানি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর অবশেষে রায় ঘোষণা করল কলকাতা হাইকোর্ট৷ তাতে বড়সড় ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার৷ গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে নতুন করে নিয়োগের রায় ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট৷ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের সিঙ্গেল বেঞ্চ৷
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১৬ আগস্ট প্রথম রাজ্যবাপী টেট পরীক্ষা হয়েছিল শিক্ষক নিয়োগের জন্য৷ সেখানে প্রশিক্ষিত চাকরি প্রার্থী হিসেবে ১ লক্ষ ২০ হাজার ও অপ্রশিক্ষিত চাকরি প্রার্থী হিসেবে ২ লক্ষ ২৮ হাজার প্রার্থী, সব মিলিয়ে অন্তত ২ লক্ষ ২৮ হাজার পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হন৷ কিন্তু বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ না দেখে রাস্তায় নেমেছিলেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ পুলিশের লাঠি, গ্রেপ্তারি, হেনস্থা, রাতভর ধর্না, গভীর রাতে পুলিশের তাণ্ডব, বিকাশ ভবন থেকে চাকরিপ্রার্থীদের তুলে দেওয়ার মতোর বিতর্কের পর ২০১৮ সালে চাকরিপ্রার্থীদের নথি যাচাইয়ের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে বাধ্য হয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন৷ তারপরে ২০১৯ সালে এ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়।
তবে আগের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হলেও নিয়োগ বাতিল করা যাবে না বলে জানিয়েছে আদালত৷ আগামী ৪ জানুয়ারি থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে৷ ১০ মের মধ্যে ইন্টারভিউ নিতে হবে৷ ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে শেষ করতে হবে৷ যারা নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে বাদ গেছিল, তাদের সবাইকে সুযোগ দিতে হবে বলেও জানিয়েছে আদালত৷ চাইলে ভার্চুয়াল মোডেও হতে পারে নিয়োগ৷
আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানান, এই রায়ে এটা প্রমাণিত হল, যারা নতুন নিযুক্ত হবেন তারা দুর্নীতির মাধ্যমে নিযুক্ত হবেন না৷