আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ২৫ ডিসেম্বর: আগামী সাত জানুয়ারি রাজ্যের চার জেলায় কুড়মিরা ‘হুড়কা জাম’ আন্দোলনের ডাক দেওয়ায় নেতাই দিবস নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল এবং বিজেপি দুই দলই।
প্রতি বছর এই দিন লালগড়ের নেতাই গ্রামে শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠান হয়। উপস্থিত থাকেন শুভেন্দু অধিকারী। এবার তিনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় ঝাড়্গ্রাম জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠান করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। অন্যদিকে নেতাই গ্রামের শুভেন্দু অনুগামীরা জানিয়েছেন, শুভেন্দুবাবু এই অনুষ্ঠানে থাকবেন। তবে এ ক্ষেত্রে সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে কুড়মি সমাজের আন্দোলন। সমাজের নেতা রাজেশ মাহাতো জানিয়েছেন, ওই দিন হুড়কা জাম আন্দোলনে রাস্তা অবরোধ করা হবে। তিনি বলেন, কুড়মি সমাজের দাবিগুলি রাজ্য সরকার গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না। এজন্য ৭ জানুয়ারি চার জেলায় বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। ঐদিন বাঁকুড়া পুরুলিয়া ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় রাস্তা অবরোধ করা হবে। অবরোধে কাউকেই ছাড়া হবে না।
রাজেশ বাবু জানিয়েছেন, বুধবার লোধাশুলির পথসাথী সভাকক্ষে কর্মী সমন্বয় মঞ্চের ডাকা বৈঠকে ৭ জানুয়ারি হুড়কা জাম করে এই চার জেলা অচল করে দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিনের আন্দোলনে সরকারপক্ষ কুড়মি সমাজের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক ভূমিকা না নিলে ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে আন্দোলন তীব্রতর করা হবে।
উল্লেখ্য, গত সাত ডিসেম্বর থেকে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করার পর কুড়মি সমন্বয় মঞ্চের ৩২ জন সদস্য জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে অনশনে বসেন। এরপর ১২ ডিসেম্বর প্রশাসনের আশ্বাসে অনশন তুলে নেওয়া হয়। ১৫ ডিসেম্বর সমন্বয় মঞ্চের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু সেই আলোচনাতেও তারা সন্তুষ্ট না হয়ে ফের তারা আন্দোলনে নামছেন বলে কুড়মি সমাজের নেতারা জানিয়েছেন। তবে ৭ জানুয়ারি নেতাই গ্রামের শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানে জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মু। তার আগে কুড়মি সমাজের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের পথ খোঁজা হবে বলে তিনি জানান।
অন্যদিকে, জেলা বিজেপির সভাপতি সুখময় সৎপথি জানিয়েছেন, প্রতিবারের মতো শুভেন্দু অধিকারী এবারও নেতাই গ্রামে শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানে যাবেন। আমরা তার সঙ্গে থাকব।