রাজেন রায়, কলকাতা, ৫ জানুয়ারি: প্রত্যেকদিন একাধিক নেতা মন্ত্রী বিধায়কদের দল ছাড়ার ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে তৃণমূলকে। মঙ্গলবার দুপুরে আচমকা ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর পদ এবং হাওড়া জেলা সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। কিন্তু এই ঘটনা নিয়ে খুব একটা অস্বস্তি বোধ করেননি মুখ্যমন্ত্রী। লক্ষ্মীরতন শুক্লা প্রসঙ্গ নিয়ে এদিন নবান্নে বেশ হাসিখুশি ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এদিন নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ইস্তফাপত্র পাওয়ার কথা স্বীকার করে লক্ষ্মীকে ‘ভাল ছেলে’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “ও খেলাধূলার জন্যই সমস্ত রাজনৈতিক পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছে।”
লক্ষ্মীরতন শুক্লার ইস্তফা দেওয়ার প্রসঙ্গে মমতা এদিন বলেন, “লক্ষ্মী ভাল ছেলে। সবরকম পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক এই বিষয়ে আমার কাছে চিঠি এসেছে। রাজ্যপালকে ইস্তফা গ্রহণ করতে বলেছি। খেলার জন্যই রাজনীতি ও ছাড়তে চায়। ও খেলাতে বেশি মনোযোগ দিতে চায় বলে চিঠিতে জানিয়েছে। আর কয়েক মাস বাদেই তো নির্বাচন। এতে ভুল বোঝাবুঝির কোনও ব্যাপার নেই।” এতে রাজনৈতিক কোনও বিতর্ক বা দলের সঙ্গে মনোমালিন্যের কোনও বিষয় নেই বলেই যেন বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন মমতা। এটা বোঝাতে চেয়েছেন যে পুরো বিষয়টি তার আগে থেকেই জানা ছিল।
তবে এমন একটা সময় যখন একের পর এক তৃণমূল নেতা দলের বিরুদ্ধে হাঁটছেন তখন প্রাক্তন রঞ্জি অধিনায়কের ইস্তফা নিয়েও জল্পনা বড় আকার নিচ্ছে। শুধুই কি খেলা নাকি তার পেছনে আরও বড় রাজনৈতিক খেলা রয়েছে, তা নিয়ে জল্পনা চলছে বিভিন্ন মহলে। সূত্রের খবর, হাওড়া জেলার দুই তৃণমূল নেতা অরূপ রায় ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতবিরোধের জেরে দলের অন্দরে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছিল লক্ষ্মীর। সম্ভবত সেই কারণেই তিনি হাওড়া জেলা সভাপতির পদ থেকেও ইস্তফা দিলেন। লক্ষ্মী রতন শুল্কা জানান, এলাকার মানুষ তাঁকে নির্বাচন করেছেন। কিন্তু পুর বোর্ড না থাকায় কাজ হচ্ছে না। তাই তিনি মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন, সভাপতি পদও ছাড়লেন। কিন্তু মানুষের জন্য কিছু হলেও কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে বলে বিধায়ক পদ ছাড়লেন না।