
সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ২৯ নভেম্বর:
কিছুদিন আগেই লুক আউট নোটিশ জারি হয়েছিল প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের নামে। এবার ইডি গোয়েন্দারা আশঙ্কা করছেন, নীরব মোদী, বিজয় মাল্যের মত তদন্ত এড়াতে এবার দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন রোজভ্যালি সংস্থার কর্ণধারের সহধর্মিনী তথা অভিনেত্রী শুভ্রা কুন্ডু। তাই কলকাতা বিমানবন্দর সহ দেশের সমস্ত বিমান বন্দরে ইডি গোয়েন্দাদের অনুরোধে জারি করে দেওয়া হল লুক আউট নোটিস।
ইডি সূত্রের খবর, এর আগেও তাকে তিন তিনবার নোটিশ পাঠানো হয়। তবে ২০১৪ সালে একবার সল্টলেক সিজিও কমপ্লেক্সে বোরখা পড়ে হাজিরা দিলে দিলেও সম্প্রতি তিনবারের নোটিশে তার কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি। গোয়েন্দাদের তার প্রতি সন্দেহ বাড়ে ২০১৭ সালে।
রোজভ্যালি কাণ্ডে ইডি’র তৎকালীন তদন্তকারী অফিসার মনোজ কুমারের সঙ্গে একাধিকবার দিল্লির হোটেলে ও বিমানবন্দরে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা যায় শুভ্রা কুণ্ডুকে। পরে এডিট তদন্তে মনোজ কুমারের নামে উত্তরপাড়ার বাড়ি, রাজারহাটের দামী ফ্ল্যাট-সহ অন্যান্য সম্পত্তিও পাওয়া যায়। এমনকি মনোজ কুমারের সঙ্গে শুভ্রা যে দিল্লিতে গিয়েছিলেন তারও প্রমাণ পাওয়া যায়। অভিযোগ ওঠে তদন্তের গতিপথ বদলে দিতে মনোজ কুমারকে ব্যক্তিগত এবং সম্পত্তিগত ভাবে রোজভ্যালির তরফ থেকে অনৈতিক সুবিধা দেওয়া হয়েছে। তারপরই মনোজ কুমারকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
ইডি সূত্রে খবর, গয়নার বিপণি সংক্রান্ত যে হিসেব পাওয়া গিয়েছে, তাতে কয়েকশো কোটি টাকারও বেশি হিসাবে গন্ডগোল রয়েছে। বাগুইআটিতে রোজভ্যালির টেলিভিশন চ্যানেলের প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্টেরও দায়িত্ব ছিল শুভ্রা কুন্ডুর। এমনকি মন্দারমণির রোজভ্যালি রিসর্টের মালিকানাও ছিল শুভ্রা কুণ্ডুর নামেই।
এই নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনবার নোটিশ পাঠিয়েও তিনি না আসায় সম্প্রতি ২১ নভেম্বর ইডি আধিকারিকরা দক্ষিণ কলকাতার সাউথ সিটি আবাসনে গৌতম কুণ্ডুর স্ত্রী শুভ্রা কুণ্ডুর ফ্ল্যাটে হানা দেন। কিন্তু তাঁর বাড়িতে থাকা পরিচারিকা জানান, শুভ্রাদেবী সপ্তাহখানেক আগে শহরের বাইরে গিয়েছেন। তার সন্ধানে তল্লাশি চললেও তিনি যাতে নিজের দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন, সেই কারণেই এই আগাম তৎপরতা নেওয়া হল বলে ইডি সূত্রের খবর।