বিষ্ময় বালক! ১০ বছরের অনুব্রত বানিয়েছে ৬টি অ্যাপ, আলিপুরদুয়ারে বসেই চিনকে করল নিষিদ্ধ

আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ৪ জুলাই: বয়স মাত্র ১০ বছর। ক্লাস ফাইবের অনুব্রত সরকার সম্পর্কে একটাই বিশেষণ আপাতত ব্যবহার করা যায় ‘জিনিয়াস’। ইতিমধ্যেই প্রচন্ড মেধাবী এই ছাত্রের কীর্তির কথা শুনে চমকে গিয়েছেন অনেকেই। প্রায় ১০০ শতাংশ মানুষেরই প্রশ্ন কিভাবে সম্ভব এমনটা! মাত্র ১০ বছরের একটি ছেলে কীভাবে জাভা স্ক্রিপ্ট সহ বিভিন্ন কম্পিউটার ল্যাঙ্গুয়েজ শিখে ফেলছে! নিজেই এক, দুই করে ৬টি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে ফেলছে, সেখানে প্রাইভেসি পলিসি থেকে সিকিউরিটি সব কিছু নিজেই ঠিক করছে সে। শুধু তাই নয়, তার হাতে তৈরি আর গোটা দুয়েক মোবাইল অ্যাপ রয়েছে। যা গুগল প্লেস্টোরে আপলোডের অপেক্ষায় রয়েছে।

ইতিমধ্যেই তার অ্যাপ যে পুরোপুরি সুরক্ষিত সেই শংসাপত্র পেয়ে গেছে অনুব্রত। আপাতত বিশ্বের সবকটি দেশেই তার অ্যাপ ডাউনলোড করা যাচ্ছে। তবে ছোট্ট অনুব্রতর কথায়, “চিনে আমার অ্যাপ কেউ ডাউনলোড করতে পারবে না।ওরা আমাদের সেনাবাহিনীর সদস্যদের মেরে ফেলছে। দাদাগিরি দেখাচ্ছে। আমিও দাদাগিরি দেখালাম।”

আলিপুরদুয়ার শহরের নিউটাউনেই বাড়ি অনুব্রতর।ছটফটে ছেলেটির বাবা পেশায় পরিচিত শিক্ষক কৌশিক সরকার জেলাসদরে জিৎপুর হাইস্কুলে ও অনুব্রতর মা শান্তা ভট্টাচার্য বালিকা শিক্ষামন্দির স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। কৌশিকবাবুর কথায় এক্কেবারে ছোটবেলা থেকেই কম্পিউটার, অঙ্ক সহ বিভিন্ন বিষয়েই তার সমান আগ্রহ। মাত্র ৮ বছর বয়সে প্রথম অ্যাপ তৈরি করে সে। ক্লাস থ্রি থেকেই রিজিওনিং, কোডিং, ডিকোডিং চর্চা করে।কম্পিউটারে হাতেখড়ি ৪বছর বয়সে।

ইতিমধ্যে দেশের সবকটি গুরুত্বপূর্ণ অনলাইন অলিম্পিয়াডে অংশ নিয়েছে সে। সিলভারজোন অলিম্পিয়াডে ট্যালেন্ট হান্ট-এ আন্তর্জাতিক র‍্যাঙ্কিং করে সোনার পদক জিতে নেয়। সেখানেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খুদেদের সঙ্গে লড়াই ছিল তার। অন্যদিকে সমান পারদর্শী একরত্তি এই বালক বর্তমানে দশম শ্রেণিতে পাঠরত দিদির কম্পিউটারের প্রাক্টিস দেখে দেখে এইচটিএমএল পুরো ধাতস্থ করে ফেলেছে, যা দেখে চমকে যায় বাবা। এরপরার থেমে থাকেনি সে। এক এক করে তৈরী করতে থাকে অ্যাপ। যা দেখে অনেকেই বিস্মিত হয়ে গেছেন মাত্র ১০বছর বয়সে নিজের থেকে কিভাবে সম্ভব।

আপাতত তার তৈরি অ্যাপের তালিকায় রয়েছে লুডোশিপ, মিটঅ্যাপ, পিঞ্চহিটার ব্যাটসম্যান, ব্রিকোমিটার, লিজেন্ডারি রানার্স। এরমধ্যে দুটি গেমিং অ্যাপ থাকলেও মিটঅ্যাপ কার্যত তাক লাগিয়ে দেবার মত একটি চ্যাটিং সফটওয়্যার।তথ্য বলছে তার বয়স যখন মাত্র ৯ তখনই প্রথম গেমিং সফটওয়্যার তৈরি করে।

ছোট্ট অনুব্রতর কথায়, নির্ভয়ে, নিশ্চিন্ত হয়ে আমার চ্যাটিং অ্যাপ যেকেউ ব্যবহার করতে পারেন। গুগল প্লেস্টোরে পরিস্কার দেখা যাচ্ছে সাধারনের রেটিং এ ফাইভ স্টার মার্কিং পেয়ে গিয়েছে সে। শুধু টেকনোলজি নিয়েই নয় অনলাইন দাবা হোক বা ক্রিকেট দুটিই পছন্দ করে অনুব্রত।কলকাতায় একটি জনপ্রিয় টিভি শোতে মাত্র ৪ বছর বয়সে গিয়েছিল সে। শোয়ের সঞ্চালক স্বয়ং সৌরভ গাঙ্গুলি ছিলেন। তিনিও চমকে গিয়েছিলেন সেদিন। বিশ্বের যেকোনো দেশের রাজধানীর নাম তার ঠোটের আগায় থাকে। এমনকি বিজ্ঞানের বিভিন্ন সাংকেতিক নামও তার অজানা নয়। কিন্তু শিখল কিভাবে?

বাবা কৌশিকবাবু জানান, বাড়িতে যখন পড়াশুনা চলে তখন দরজার বাইরে দাড়িয়ে শুনে শুনেই শিখে নিয়েছে।আমি যখন জানতে পারলাম আমি নিজেও অবাক হয়ে গেছিলাম। ক্লাস ফাইবে থাকলেও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যক্রম নিয়ে নাড়াচাড়স করে বাড়িতে এই খুদে ছাত্র। তার মেধার বিষয় নিয়ে বলতে গিয়ে কৌশিকবাবু বলেন, “অনেক সময় আমরা নিজেও অবাক হয়ে যাই।”

বড় হয়ে কী হতে চাও? অনুব্রত জানিয়েছে সে রোবোটিকস নিয়ে পড়াশোনা করতে চায়। আপাতত শহরের একটি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে ক্লাস ফাইভে পড়ে সে। কেউ কেউ ইতিমধ্যেই তাকে বিশ্ময় বালক বলেছেন। গুগল প্লে স্টোরে তার নতুন কি অ্যাপ আগামী দিনে আসতে চলেছে তা নিয়েও ইতিমধ্যেই আলিপুরদুয়ারে একটি মহলে আগ্রহ ছড়িয়েছে। এও বলা হচ্ছে নির্দিষ্ট পথে এগোলে অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবে সে, আরও বিষ্ময় হয়তো অপেক্ষা করে আছে আগামীতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *