চা বাগানের শ্রমিকদের সতর্ক থাকতে বললেন মলয় ঘটক

আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ১৭ সেপ্টেম্বর: মঙ্গলবারই খুলে গিয়েছিল মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের মুজনাই চা-বাগান।বৃহস্পতিবার কার্যত উৎসবের মেজাজে মহালয়ার দিনে ঐ চা-বাগানেই পৌঁছে গেলেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। এদিনই ৮৩৬ জন চা-শ্রমিকদের হাতে তুলে দেওয়া হল ৫ কেজি করে চাল। প্রত্যেক শ্রমিকদের দেওয়া হল দুটি করে ক্যাস জি.আর। পাশাপাশি এদিনই আর একবার মুজনাই চা বাগান সহ উত্তরবঙ্গের ৩০২টি চা-বাগানের শ্রমিকদের সতর্ক করে দিয়েছেন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। চা শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা মানুষ চিনতে, সরকার চিনে নিতে ভুল করবেন না।আপনাদের কারা ঠকিয়েছে তাদের চিনে নিন। একইসাথে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের জনবিরোধী নীতির কথা, উত্তরবঙ্গের চা শিল্পের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী রাজ্য অসম।সেখানেও চা শিল্প রয়েছে।তবে বাংলার চা-শ্রমিকরা অনেক ভাল আছেন অসমের তুলনায়। যদিও অসমে বিজেপির সরকার চলছে। আপনাদের যারা ভুল বোঝাতে আসবে তাদের প্রশ্ন করুন।

উল্লেখ্য, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বর্তমানে অসমের তুলনায় দৈনিক হাজিরাতে এগিয়ে বাংলার চা-শ্রমিকরা। উত্তরবঙ্গে একজন চা-শ্রমিক যেখানে ১৭৬ টাকা হাজিরা পাচ্ছেন, অসমে তা ১৬৪ টাকার মত। শুধু তাই নয়, চা বিশেষজ্ঞদের একটি অংশ বলেন, জয় জোহার প্রকল্পে একজন চা শ্রমিক আজীবন সরকারি পেনশন পাবেন। চা সুন্দরী প্রকল্পতে চা-শ্রমিক নিজের ঘর পাবেন। এস.টি মর্যাদা, সরকারি বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প, সরকারি অন্যান্য প্রকল্পের সুবিধা চা-বাগানের ভেতর পর্যন্ত পৌছে গেছে।

চা মহলের একটি অংশ বলেন, যেভাবে বাংলার সরকার চা-শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছে তাতে শুধু চা শ্রমিকরা নন, চা বাগানের মালিকদের দায়বদ্ধতা অনেকটাই কমে গেছে। যদিও চা বাগানের মালিকরা যদি শ্রম আইন মেনে চলতো ৩০২টি চা-বাগানে তাহলে আরও সুন্দর হত উত্তরবঙ্গের ৩০২টি চা-বাগান।

চা-বাগান তৃণমূল কংগ্রেস মজদুর ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি মোহন শর্মা বলেন, দেশের যে কোনও রাজ্যের চা-বাগানের সঙ্গে তুলনায় যেতে পারি আমরা। অসমের চা-বাগানে একজন চা শ্রমিকের থেকে আমাদের উত্তরবঙ্গের ৫ লক্ষ চা-শ্রমিক অনেক বেশি অধিকার ভোগ করেন। এমন একটি চা-বাগান নেই উত্তরবঙ্গে যেখানে সরকারি পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির জন্য তা সম্ভব হয়েছে।

এদিকে এদিন মলয় ঘটক, মোহন শর্মা ছাড়াও মুজনাই চা বাগানে সরকারি অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সভাধিপতি শিলাদাস সরকার, জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মিনা, জেলা পুলিস সুপার অমিতাভ মাইতি সহ বিশিষ্ট জনেরা। উল্লেখ্য, দীর্ঘ ২১ মাস বন্ধ থাকার পর নজিরবিহীনভাবে কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেই নতুন করে পথ চলা শুরু হয় মুজনাই চা-বাগানের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *