বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’- হাথরসের ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ মমতা-অভিষেকের

রাজেন রায়, কলকাতা, ১ অক্টোবর: উত্তরবঙ্গে পথশ্রী প্রকল্প উদ্বোধনের সময় ‘দলিতদের উপর নির্যাতন আবার তাদের বাড়িতেই ভোজন’ বলে কেন্দ্রীয় সরকার বিজেপিকে বিঁধেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার টুইটারেও উত্তর প্রদেশের হাথরাসে গণ-ধর্ষণ মামলায় প্রতিক্রিয়া জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সোশাল মিডিয়ায় ‘বেটি বাচাও বেটি পড়াও’ উদ্ধৃতি করে সরাসরি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করেন মমতা। সেই সঙ্গে এদিন মুখ্যমন্ত্রী টুইটে লেখেন,’এক দলিত তরুণীকে নিয়ে হাথরাসে যে লজ্জাকর ও নৃশংস ঘটনা ঘটল, তার নিন্দা করার কোনও ভাষা নেই। ওর পরিবারের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা রইল।’

পরিবারের আপত্তি সত্বেও নির্যাতিতা তরুণীর দেহ সৎকার করা নিয়েও আপত্তি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। টুইটারে তিনি আরও লেখেন, ‘আরও লজ্জার, ওই তরুণীর পরিবারের আবেদন অগ্রাহ্য করে বলপূর্বক তার দেহ দাহ করা। সেখানে ওদের কাউকে থাকতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। এই ঘটনায় যারা ভোটের লোভে বড় বড় স্লোগানের পাশাপাশি বড় বড় আশ্বাস দেয়, তাদের স্বরূপ প্রকাশ পেল।’

প্রসঙ্গত, ১৯ বছর বয়সী হাথরসের তরুণীকে গণ-ধর্ষণের পাশাপাশি তাঁর উপর নারকীয় অত্যাচার চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। প্রথমে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল (জেএনএমসি)-এ চিকিৎসা চলছিল তাঁর। সেখান থেকে ওই তরুণীকে সোমবারই স্থানান্তরিত করা হয় দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে। মঙ্গলবার ভোররাতে সফদরজং হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

ওই তরুণীর পরিবার সূত্রের খবর, গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাড়ির কাছেই একটি জমিতে মা ও ভাইয়ের সঙ্গে জমিতে ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন ওই তরুণী। বিকেলের দিকে ভাই বাড়িতে চলে যায়। মায়ের থেকে কিছুটা দূরে ছিলেন ওই তরুণী। সেই সময় পিছন থেকে দিদিকে আক্রমণ করে কয়েক জন দুষ্কৃতী। গলায় ওড়না পেঁচিয়ে টানতে টানতে একটি বাজরা খেতের মধ্যে নিয়ে গিয়ে নৃশংস অত্যাচার চালায় ও গণ-ধর্ষণ করে। পরে মা খুঁজতে খুঁজতে মেয়েকে উদ্ধার করেন অচৈতন্য অবস্থায়। এই ঘটনায় উচ্চবর্ণের ৪ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যদিও অভিযোগ তারা সকলেই আত্মীয় এবং বিষয়টিকে ধর্ষণ নয় বলে দাবি উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের।

অন্য দিকে, উত্তর প্রদেশের কান্ড নিয়ে টুইটারে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন টুইট করে তিনিও মুখ্যমন্ত্রীর মত বিজেপি–র ‘বেটি বচাও, বেটি পড়াও’ স্লোগানকে কটাক্ষ করে লেখেন, “সে (হাথরসের গণধর্ষিতা) মর্যাদার সাথে বাঁচতে পারত না এবং বিজেপির ইউপি সরকার তাঁকে মর্যাদার সাথে মরতেও দিল না। এটি খুবই ঘৃণ্য যে শেষ বারের মত নিজের সন্তানকে তাঁর মাকে দেখতে দেওয়া হল না। বিজেপি মহিলা ক্ষমতায়নের মিষ্টি কথাবার্তা ও বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও বিষয়টি একটি লজ্জাজনক বাস্তবতা।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *