অজানা নম্বর থেকে ২২ বার ফোন মুখ্যমন্ত্রীকে! বিরক্ত হয়ে পুলিশ কমিশনারকে তদন্তের নির্দেশ

রাজেন রায়, কলকাতা, ৪ জুন: স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীই তাঁর দলের নেতামন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন, সবসময় সকলের ফোন ধরবেন। নইলে কারও কোনও সমস্যা হলে জানা সম্ভব হবে না। উল্লেখ্য, তৃণমূল নেতামন্ত্রীদের ফোনে পাওয়া যায় না বলে এর আগে দলের অন্দরেই তৈরি হয়েছিল অসন্তোষ। তাই এহেন সিদ্ধান্তের কথা সকলকে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন দলে সেই নীতিই চালু আছে। কিন্তু এবার জনপ্রিয় হওয়ার সুবাদে খোদ তিনি নিজেই বিপাকে।

অভিযোগ, নবান্নের সভাঘরে রাজ্যের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করার সময়ে বুধবার বিকেলে অন্তত ২২ বার বাজল তাঁর ফোন। একেই করোনা থেকে আমফান বিপর্যয়ের ধাক্কা সামাল দিতে অতি মাত্রায় ব্যস্ত প্রশাসন। তার ওপর এদিন কাজের সময়ে অচেনা নম্বর থেকে বারবার ফোন আসায় প্রচণ্ড বিরক্ত হয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথাও বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

জানা গিয়েছে, বুধবার নবান্নের সভাঘরে বৈঠক করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক সেই সময় একবার দুবার নয়, বারবার ফোন বেজে ওঠে। ফোন তুলে মুখ্যমন্ত্রী দেখেন, একটি নির্দিষ্ট নম্বর থেকেই বারবার ফোন আসছে। কেউ রেগে গেলে যেমন আরেক জনকে ফোন করতেই থাকেন, অনেকটা সেরকম। কিন্তু বিষয়টিকে মোটেই হালকা ভাবে নেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আচমকা গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের মধ্যে বারবার ফোন বেজে ওঠায় সাইলেন্ট মোডে করে দিয়েও বেশ বিরক্ত হন তিনি।

এরপরই কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কে বারবার ফোন করছে। অন্তত ২২ বার ফোন এসেছে অজানা নম্বর থেকে। সারাক্ষণ আমার লাইনটা ব্যস্ত রেখেছে। অনুজ একটু দেখো তো।” তবে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা বিষয়টি বেশ হালকাভাবেই নিয়েছেন। তিনি হাসি হাসি মুখে হালকা মেজাজে বলেন,“আপনি এত জনপ্রিয় তো, তাই ফোন আসছে।”

তবে দলীয় সূত্রে খবর, দল এবং সরকারের অত্যন্ত আস্থাভাজন ছাড়া কাউকেই ফোন নম্বর দেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাদের মধ্যে কেউ নম্বর অন্য কোনও দলীয় কর্মীকে জানালে তবেই মুখ্যমন্ত্রীর নম্বর ‘লিক’ হওয়া সম্ভব। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর নম্বর কে পেয়ে গিয়ে তাঁকে বিরক্ত করা শুরু করল, সেই বিষয়টিই গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *