প্যাকেজ নয়, সুরক্ষাহীনতা থেকে শ্রেণিবৈষম্য তাদের ফিরতে বাধ্য করেছে, দাবি মণিপুরী নার্সদের

রাজেন রায়, কলকাতা, ১৯ মে: কিছুদিন আগে থেকেই বিপুল হারে রাজ্যের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ভিন রাজ্যের বিভিন্ন নার্সদের ইস্তফার কারণে প্রমাদ গুনেছিলেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। এখনো পর্যন্ত প্রায় ৬০০ নার্স নিজেদের রাজ্যে ফিরে গিয়েছেন। কিন্তু আর্থিক প্যাকেজের লোভে নয়, তারা ফিরে গিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গে হওয়া তাদের সুরক্ষা হীনতার থেকে শ্রেণি বৈষম্যের কারণে। নিজের রাজ্যে ফিরে প্রেস বিবৃতিতে সাংবাদিকদের সামনে এমনটাই দাবি করলেন মনিপুরী নার্সরা।

ওই প্রেস বিবৃতি পত্রে তারা পরিষ্কার জানিয়েছেন, এ রাজ্যে দিনের পর দিন যত সংক্রমণ বেড়েছে, ততটাই ব্যক্তিগত ভাবে ঝুঁকি বেড়ে গিয়েছে তাদের। এমনকি তারা সামাজিক ভাবেও বিভিন্ন সমস্যার শিকার হয়েছিলেন। সেই কারণেই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের সামাজিক ভাবে পৃথকীকরণ করা হচ্ছিল। শ্রেণিগত থেকে লিঙ্গগত সমস্ত বৈষম্যের তাঁরা স্বীকার হচ্ছিলেন। যেখানে পিপিই, মাস্ক, গ্লাভসও দ্বিতীয় বার ব্যবহার করার কথাই নয়, সেখানে তাঁদের ফেলে দেওয়া পিপিই, মাস্ক, গ্লাভস ব্যবহার করতে বাধ্য করছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যার ফলে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছিল।

অনেকক্ষেত্রে চিকিৎসকদের ছাড় দিয়ে পুরোপুরি নার্সদের অতিরিক্ত ডিউটি দেওয়া হচ্ছিল। যেসব জায়গায় কলকাতায় তারা পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকেন, সেই জায়গাতেও অপমাণের শিকার হতে হচ্ছিল। করোনা রোগীদের চিকিৎসায় নিযুক্ত নার্সদের আলাদা থাকার ব্যবস্থা করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যার ফলে আমাদের হাসপাতাল থেকে ফিরে হস্টেলেই থাকতে হচ্ছিল। এর ফলে হস্টেলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা ছিল।

কিছু হাসপাতাল আচমকা বন্ধ করে দেওয়া হলেও তাদের বেতন মিটিয়ে দেওয়া হয়নি। ভিন রাজ্যে তারা বিনা বেতনে থাকবেন বা খাবেন কিভাবে? এমনকি হাসপাতালে যথেষ্ট খাবার ছিল না। নার্সরা রেশন কার্ড হোল্ডার না হওয়ায় তারা সরকারি কোনও খাদ্য সামগ্রীও পেতেন না। অন্তত সরকার বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অথবা সাধারণ মানুষের সমর্থন থাকলে তারা কলকাতা শহর ছাড়ার কথা ভাবতেন না। কষ্টার্জিত জীবিকা সহজে কেউ ছেড়ে যেতে চায় না, এমনটাই দাবি তাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *