সুশান্ত ঘোষ, বনগাঁ, ৯ ডিসেম্বর: মতুয়ারা সকলেই এদেশের নাগরিক। কারও কোনও প্রমাণপত্রের প্রয়োজন নেই। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর গোপালনগরের জনসভা থেকে এই মন্তব্য করলেন মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘মতুয়ারা সকলেই এদেশের নাগরিক।আপনাদের কোনও প্রমাণপত্রের প্রয়োজন নেই।
বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিধানসভা নির্বাচনে মতুয়া ভোট ফেরানোই লক্ষ্য তৃণমূলের। গত লোকসভা ভোটে তৃণমূলের কাছ থেকে আসনটি ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। মতুয়া ভোটের বড় অংশ বিজেপি পাওয়ায় এই কেন্দ্রে পিছিয়ে পড়ে তৃণমূল। ফলে বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই কেন্দ্রে দাঁড়িয়েই আজ বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ের ডাক দেন মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়।এদিনের সভা থেকে মতুয়াদের জন্য রাজ্য সরকারের
নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। বলেন, ‘বড়মার চিকিৎসা আমি নিজে করিয়েছি। মতুয়াদের যে এত ভক্ত, এত গোঁসাই আছে কেউ জানত না। এটা আমার পুরনো জায়গা।’ তিনি যোগ করেন, ‘আমরা বাউরি সম্প্রদায়ের জন্য করেছি।মতুয়া উন্নয়নের বোর্ড তৈরি করেছি। ১০ কোটি টাকাও দিয়ে দিয়েছি। কমিটি আপানারা তৈরি করলেই কাজ শুরু হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মদিনে ছুটি ঘোষণা করা হবে। হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরু হয়ে গেছে।পশ্চিমবঙ্গের পাঠ্যপুস্তকে হরিচাঁদ ঠাকুরের জীবনী অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
সিএএ নিয়ে কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ করেন তৃণমূলনেত্রী। বলেন, ‘সিএএ করে প্রতারণার চেষ্টা করা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের থেকে উদ্বাস্তু কলোনিগুলিকে স্বীকৃতি দিয়েছি।অন্য সব কলোনিগুলিকেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলনেত্রী জানিয়ে দেন, রাজ্যে এনআরসি-এনপিআর হবে না। বলেন, ‘রাজ্যে এনআরসি-এনপিআর করতে দেব না। রাজ্যকে গুজরাত বানাতে দেব না।’
বিজেপির পাশাপাশি সিপিএমকেও তুলোধনা করেন।বলেন, ‘সিপিএম-এর হার্মাদরা বিজেপির ওস্তাদ হয়ে গেছে। বাইরে থেকে আরএসএস-এর গুন্ডা নিয়ে আসছে। বিরোধীদের তৃণমূলনেত্রীর চ্যালেঞ্জ করে বলেন, ক্ষমতা থাকলে রাজনৈতিক-গণতান্ত্রিকভাবে লড়াই কর। বলেন,‘বাইরে মানুষরা এসে মতুয়াদের হিন্দুধর্ম শেখাচ্ছে।এরা বহিরাগত, বাংলার লোক নয়। ক্ষমতা থাকলে রাজনৈতিক-গণতান্ত্রিকভাবে লড়াই কর।
মতুয়া বড়মার পরিবারের এক সদস্য মমতাবালা ঠাকুর তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ, অপরজন শান্তুনু ঠাকুর বিজেপির বর্তমানসাংসদ। এই প্রেক্ষিতেই নাম না করে বিজেপিকে একহাত নেন মমতা। বলেন, ‘বিভেদের রাজনীতি করছে। মতুয়াদের ভেঙ্গে দিয়েছে।হিন্দু-মুসলমান ভাগ করছে।’
কৃষক আন্দোলন নিয়েও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ান মমতা। বলেন, ‘কৃষকদের জমি কেড়ে নিয়েছে। আগামীদিনে কৃষকরা কোথায় যাবে? গায়ের জোরে কৃষক বিরোধী তিনটি আইন করেছে।কৃষকরা যা তৈরি করে জোতদার, আড়তদাররা নিয়ে নেবে।কৃষকদের জীবনের আর কোনও দাম থাকবে না। কৃষকরা তাই আন্দোলন করছেন, আমরা পাশে আছি।’ তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘আলু, পেঁয়াজ, ডাল কিছুই আর অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নয়।মানুষের আর আলুসেদ্ধ-ভাত খাওয়ার সামর্থ্য থাকবে না। শীত পেরোলেই আলুর কেজি হবে ৫০ টাকা। পেয়াঁজের কেজি হয়ে যাবে ১৮০ টাকা।’
রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প ও দুয়ারে সরকার কর্মসূচির হয়ে জোর সওয়াল করেন তিনি। বলেন, ‘ স্বাস্থ্য বিমার জন্য দুয়ারে সরকার প্রকল্পে যেতে পারবেন।