পূর্ববঙ্গে হিন্দুদের স্মৃতি (৭২) গাঙ্গাটিয়া জমিদার বাড়ি দেখার জন্য প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে বহু মানুষ ভিড় জমান

আমাদের ভারত, ২৪ ফেব্রুয়ারি: হোসেনপুরের কিশোরগঞ্জের গাঙ্গাটিয়া জমিদার পরিবারের গোড়াপত্তন হয় ১৮৫৪-৫৫ এর দিকে। এই জমিদার বাড়ির অনেক ইতিহাস ও ঐতিহ্য আছে। জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা ভোলানাথ চক্রবর্তী। অন্যান্য জমিদার বাড়ির মত এটি ধ্বংসস্তুপে পরিণত না হয়ে এখনো এটি পুরোপুরি টিকে আছে। কেননা এখনো এই জমিদার বাড়ির বংশধর এই বাড়িতে বসবাস করছেন।

এই জমিদার বাড়ির বর্তমান বংশধর হচ্ছেন মানববাবু, পুরো নাম মানবেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী চৌধুরী। মানববাবু তার স্ত্রী ও বোনকে নিয়ে এই বাড়িতে বসবাস করছেন, তিনি নিঃসন্তান।

মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী এই জমিদার বাড়িতে হামলা চালায়, শুধু লুটপাট করে ক্ষান্ত হয়নি, মানববাবুর পিতা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা পাকবাহিনী ও দোসরদের হাতে প্রয়াত হন, বর্তমানে পাকবাহিনী যে জায়গায় দু:খ জনক ঘটনা ঘটিয়েছিল সেখানে তিনি একটি সমাধি তৈরি করেছেন। এই জমিদার বাড়ির মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করেছেন। মানববাবু তাঁর বাড়ির পাশের জায়গা সহ অন্যান্য জায়গা দিয়ে দিয়েছেন গ্রামের মানুষদের কল্যানের জন্য, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মন্দির, বাজার, তিনি নিঃসন্তান বয়স প্রায় ৯০ ছুঁই ছুঁই কিন্তু তাঁকে দেখে এরকম বয়স মনে হয় না একদমই। এখনো বেশ কর্মঠ, তাঁর মাছের ঘেড় আছে, সেখান থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে তিনিসহ অন্যান্যরা জীবিকা নির্বাহ করেন, আর গ্রামের কল্যাণের জন্য কাজে লাগান।

বর্তমানে এই জমিদার বাড়িটি মানববাবুর বাড়ি নামেই বেশ পরিচিত। এই জমিদার বংশধররা ছিলেন উচ্চশিক্ষিত। জমিদার বংশের পূর্বপুরুষদের আদি বসবাস ছিল ভারতের কাইন্নকব্জিতে। প্রায় ৬০০ বছর আগে তারা সেখান থেকে হোসেনপুরে এসে বসতি স্থাপন করেন। এখনও এই অঞ্চলের মানুষরা মানবেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী চৌধুরী (মানববাবু) কে জমিদার হিসেবেই স্বীকৃতি ও সম্মান করেন। প্রায় প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে তাঁর বাড়ি দেখার জন্য বহু দর্শনার্থী ভিড় জমান।

সূত্র— মহম্মদ কাইজার হোসেন সেভ দি হেরিটেজেস অফ বাংলাদেশ ফেসবুক গ্রুপ।
সংকলন— অশোক সেনগুপ্ত।

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here