পরিযায়ী শ্রমিকরা আমাদের আপনজন, তাদের করোনা সংক্রমণকারী বলা অন্যায়, ট্যুইটে খোঁচা রাজ্যপালের

রাজেন রায়, কলকাতা, ২৯ মে: আমফান বিপর্যস্ত বঙ্গে কিছুদিন পর থেকে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালু করতে অনুরোধ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু
রাজ্যের আর্জি না মেনেই রাজ্যকে বিপদে ফেলতেই বিপুল হারে পরিযায়ী শ্রমিক সহ ট্রেন পাঠাতে শুরু করেছে কেন্দ্র, বুধবার নবান্নে এমনই অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে রাজ্যে দ্বিগুণ হারে করোনা সংক্রমণও বাড়তে শুরু করেছে। কিন্তু তার জন্য রাজ্য যেভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরে আসাকে দোষ দিচ্ছে, সেটা ঠিক নয়। শুক্রবার এই ভাষাতেই পর পর তিনটি ট্যুইট করে রাজ্যকে খোঁচা দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তাঁর বক্তব্য, রাজ্যের বেহাল স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় করোনা পরিস্থিতি সামলাতে না পেরে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধির জন্য পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজের রাজ্যে ফিরে আসাকে দোষ দিচ্ছেন, সেটা কাম্য নয়।

এদিন রাজ্যপাল ট্যুইট করে বলেন ‘যে পরিযায়ী শ্রমিকরা রাজ্যে ফিরে আসছেন তারা আমাদের আপনজন। তারা পেটের দায়ে রাজ্য ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীকে বলব ওরা আমাদের সম্পদ, কেউ ফেলনা নয়। আমাদের ছেলেমেয়েরা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়ে নিজেদের ঘরে আপনজনের কাছে ফিরতে চাইতেই পারেন।

https://twitter.com/jdhankhar1/status/1266193638955954176?s=19

বিশ্বব্যাপী মহামারীর প্রেক্ষাপটে নিজেদের বাড়ি ফিরে আসলে তাদের উষ্ণ আমন্ত্রণ প্রাপ্য। তাদের করোনা সংক্রমণকারী হিসাবে বলা অন্যায়, অত্যন্ত হতাশা ব্যঞ্জক এবং হৃদয়বিদারক।

https://twitter.com/jdhankhar1/status/1266193757457666048?s=19

মানবিক মূল্যবোধ অটুট রেখে করোনা সংক্রান্ত সমস্ত নিয়মাবলী এবং নির্দেশ মেনে চলা যায়, এটাই বলব মুখ্যমন্ত্রীকে।’

https://twitter.com/jdhankhar1/status/1266193873618874369?s=19

প্রসঙ্গত, প্রথম থেকেই রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক ফেরা নিয়ে রাজ্য-কেন্দ্র দ্বন্দ্ব শুরু হয়। রাজ্যের যুক্তি ছিল, আমফান বিধ্বস্ত বঙ্গে এখন ট্রেন পাঠানো বন্ধ না করলে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি বিগড়ে যাবে। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অভিযোগ করেন, অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় পশ্চিবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক ফেরানো নিয়ে আন্তরিক নয়। যদিও রাজ্যের দাবি, একাধিক শ্রমিক স্পেশাল ইতিমধ্যেই রেলের কাছে চাওয়া হয়েছে, কিন্তু রেলই প্রথমে অনুমোদন দেয়নি। তা খারিজ করে কেন্দ্রের দাবি, রাজ্যেরই বাসিন্দা পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রবেশ সামলাতে কার্যত নাকানিচোবানি অবস্থা রাজ্যের। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এখন পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর দোষ চাপিয়ে বাঁচতে চাইছে পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসন। কেন্দ্রের এই মনোভাবকেই আরও কড়া ভাষায় নিজের ট্যুইটে ফুটিয়ে তুললেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *