আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ২৪ জুলাই: লকডাউনের সময় বিদ্যুতের বিল মকুব, পরিযায়ী শ্রমিকদের ছয় মাস ভাতা দেওয়ার দাবিতে ডেপুটেশন দিতে গিয়ে গ্রেফতার হলেন কংগ্রেস বিধায়ক মিল্টন রশিদ। একই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় প্রাক্তন বিধায়ক, ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক দীপক চট্টোপাধ্যায়কে। ঘণ্টাখানেক পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
শুক্রবার রাজ্য জুড়ে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস ট্রেড ইউনিয়নের বিভিন্ন দাবিতে মহকুমা শাসকের অফিসে ডেপুটেশন দেওয়ার কর্মসূচি ছিল। সেই মতো এদিন বেলা ১০টার দিকে রামপুরহাট শহরের পাঁচমাথা মোড়ে জমায়েত হন দলের নেতৃত্বরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মণ, সঞ্জীব মল্লিক, কংগ্রেসের রামপুরহাট শহর সভাপতি সাহাজাদা হোসেন কিনু, ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা নেতা কামাল হাসান সহ অনেকে। দুই সংগঠনের পক্ষ থেকে পাঁচমাথা মোড়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্প সংখ্যক জমায়েত করে মহকুমা শাসকের কাছে ডেপুটেশন দিতে যাচ্ছিলেন। সে সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এনিয়ে পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এরপরেই পুলিশ দুই সংগঠনের নেতৃত্বদের গ্রেফতার করে।
সাহাজাদা হোসেন বলেন, “আমাদের দাবি ছিল লকডাউনের সময় বিদ্যুৎ বিল মুকুব, প্রতিমাসের বিল প্রতিমাসে দিতে হবে, পরিযায়ী শ্রমিকদের এককালীন ১০ হাজার এবং ছয়মাস সাড়ে সাত হাজার টাকা করে ভাতা দিতে হবে। কিন্তু পুলিশ আমাদের মহকুমা শাসকের অফিস পর্যন্ত যেতেই দিল না”।
সঞ্জীব বর্মণ বলেন, “২১ জুলাই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে বিদায়ের সুর। পুলিশের অতিসক্রিয়তা চোর সরকারের বদলের সুর। মানুষ শাসক দলের পদাধিকারি আর পুলিশের অতিসক্রিয়তায় উৎসাহী নয়। শাসক দল পুলিশ দিয়ে যতই আন্দোলনকে রোখার চেষ্টা করুক চোর সরকারের পতন রোখা যাবে না”।
মিল্টন রশিদ বলেন, “শাসক দল ব্লকে ব্লকে কর্মী সভা করবে। ২১ জুলাইয়ের ভার্চুয়াল সভায় বুথে বুথে জমায়েত করে বক্তব্য শুনতে পারবে। কিন্তু বিরোধীরা কোন কর্মসূচী করতে পারবে না। মুখ্যমন্ত্রী হিটলারি শাসন চালাচ্ছে। এভাবে বিরোধী রাজনৈতিক দলের কণ্ঠরোধ করা যাবে না”।
দীপক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যে এখন একনায়কতন্ত্র চলছে। শাসক দল সভা সমিতি করতে পারবে। তাদের ক্ষেত্রে করোনার স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। বরং পুলিশ তাদের সভা করার জায়গা করে দিচ্ছে। নিরাপত্তা দিচ্ছে। শুধুমাত্র বিরোধীরা চোর সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামলেই তাদের গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। তবে মানুষ সচেতন। এর জবাব মানুষ দেবে”।
আইএনটিইউসির জেলা সভাপতি মৃণাল বসু বলেন, “সরকার পুলিশ লেলিয়ে যতই বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করুক তার আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। সরকার বদল হবেই”।
এদিকে এদিন বিজেপি ও এস ইউ সি আইয়ের পক্ষ থেকেও বিদ্যুৎ দফতরের অফিসে অফিসে বিক্ষোভ দেখানো হয়।