আমফানে মোবাইল- ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবার আশঙ্কা, ইন্ট্রো সার্কেল রোমিং চালু রাখার নির্দেশ টেলিকম সংস্থাগুলিকে

আমাদের ভারত, ১৯ মে : তীব্র গতিতে রাজ্যের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় আমফান। আশঙ্কা বাড়ছে। বাড়ছে চিন্তাও। প্রাণরক্ষার খাতিরে ইতিমধ্যেই উপকূলবর্তী এলাকায় প্রায় ৩ লক্ষ মানুষকে সরিয়ে ফেলার কাজ করে চলছে জোর কদমে বলে সরকারি সূত্রে খবর। কিন্তু এর মধ্যেই আশঙ্কা রয়েছে ঝড়ের সময় বা পরে মোবাইল বা ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। সেই আশঙ্কা থেকেই এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই তৎপর হয়েছে কেন্দ্র সরকার। সব টেলিকম সংস্থাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে প্রয়োজনমতো যেনো ইন্ট্রা সার্কেল রোমিং চালু করা হয়। কোন জায়গায় কোন বিশেষ টেলিকম সংস্থার সংযোগ যদি বিচ্ছিন্ন হয় তাহলে গ্রাহকরা অন্য টেলিকম সংস্থার মাধ্যমে পরিষেবা যাতে পান তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর বঙ্গোপসাগরের উপরে ঘনীভূত ঘূর্ণিঝড় আমফান শক্তি বাড়িয়ে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। আগামীকাল ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার বিকেল নাগাদ আমফান আছড়ে পড়ার কথা। এই দুর্যোগের কারণে দুই রাজ্যের টেলিকম ব্যবস্থায় ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ক্ষতির মুখে পড়তে পারে টাওয়ার থেকে শুরু করে অ্যান্টেনা। ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে টেলিকম সংস্থার কেবল। আর এর ফলে বিচ্ছিন্ন হতে পারে মোবাইল যোগাযোগ। বন্ধ হতে পারে ইন্টারনেট সংযোগ।

এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় টেলিকমিউনিকেশন সচিব অভয় কুমার সিং সব টেলিকম সংস্থার সঙ্গে আজ বৈঠক করেন। ওই বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, বাংলা ওড়িশায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বেশি পড়বে্ তাই সব রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা রাখতে হবে। নজর রাখতে হবে যেন মোবাইল ও ইন্টারনেট সংযোগ কোনোভাবেই বন্ধ না হয়ে যায়। যেকোনো বড় দুর্ঘটনা হলে তা থেকে বেরিয়ে আসার প্রস্তুতিও রাখতে হবে। ইন্ট্রা সার্কেল রোমিং পরিষেবা চালু রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই পরিষেবা চালু থাকলে কোন গ্রাহক যদি নিজের সংস্থার পরিষেবা না পান তবে সেই স্থানে থাকা অন্য সংস্থানের নেটওয়ার্ক কাজে লাগাতে পারবেন।

এছাড়াও টেলিকম সংস্থাগুলিকে বলা হয়েছে ঘূর্ণিঝড় আমফানে ক্ষতি হতে পারে এমন জেলাগুলিতে স্থানীয় ভাষায় ফ্রিতে এসএমএস পাঠাতে হবে। এসএমএসের মাধ্যমে মানুষকে সতর্ক করতে হবে। আমফানের প্রভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ভয় রয়েছে। এর ফলে যাতে কোন টেলিকম টাওয়ার বন্ধ না হয়ে যায় সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে টেলিকমিউনিকেশন সংস্থাগুলিকে। প্রতিটি জায়গায় জেনারেটরের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যন্ত্রপাতি যদি বিকল হয় তাহলে দ্রুত তা সারাই করা এবং প্রয়োজনীয় পার্টস ও কর্মীও মজুদ যেনো রাখা হয়। এক কথায় টেলিকমিউনিকেশন দপ্তরের পক্ষে জানানো হয়েছে যে কোনরকম বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে যেন মানুষ কোন ভাবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন না হয়ে পড়েন সেদিকে সম্পূর্ণ খেয়াল রাখতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *