
আমাদের ভারত, ৯ মার্চ: বিজেপি এক বছর আগেই ২৪-এর লোকসভা ভোটের সংগঠনিক প্রস্তুতি শুরু করেছে। গত বছর পুজোর পর থেকেই পাড়ায় পাড়ায় বৈঠক, মিছিল, মাঠে ময়দানে জনসভার মতো কর্মসূচিও করা শুরু করেছে পদ্ম শিবির। কিন্তু হোলির পরেই প্রচারের জন্য মাঠে নামছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সূত্রের খবর, ২৪-এর প্রচারে সেই ২০১৪-র মতো প্রচার ফিরিয়ে আনতে চাইছে দল। সেবারের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশের এ প্রান্ত থেকে সে প্রান্ত ছুটে বেড়াবেন। ২০১৪-এর সময় গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে গুজরাট মডেল সাথে নিয়ে তিনি ভারতবর্ষের কোনায় কোনায় ঘুরে বেড়িয়েছিলেন। আর এবার যাবেন দুবারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজের সরকারের লম্বা তালিকা নিয়ে। তবে আগের বারের মতো এবারেও একাধিক নতুন কাজের প্রতিশ্রুতি থাকবে প্রধানমন্ত্রীর ঝুলিতে।
সূত্রের খবর, ২০২৪ -এর লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বিধানসভা ভোটের কৌশল অবলম্বন করতে চলেছে পদ্ম শিবির। পশ্চিমবঙ্গ সহ অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির জন্য তৈরি হচ্ছে উন্নয়ন প্যাকেজ। বেঙ্গল প্যাকেজও সেই মতো তৈরি শুরু করেছে বঙ্গ বিজেপি।
পদ্ম শিবিরের নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘন্ট প্রকাশের আগেই প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশের নানা প্রান্তে ১০০ সভা করবেন। বর্তমান সরকারের ভালো কাজের দৃষ্টান্ত তুলে ধরার পাশাপাশি স্মার্ট ইন্ডিয়ার পরিকল্পনাও মানুষকে জানাবেন। তবে সবটাই হবে সেই রাজ্যের চাহিদাকে মাথায় রেখে।
ইতিমধ্যে মহিলা মোর্চা এবং সংখ্যালঘুর জন্য নির্দিষ্ট কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি। সংখ্যালঘু মোর্চা দেশের সাতটি লোকসভা আসনে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রচার শুরু করেছে। যে আসনগুলিতে ভোটারের ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু, সেখানে কাজ শুরু করেছে মোর্চা। এছাড়াও উজ্জ্বলা এবং প্রধানমন্ত্রীর জনধন যোজনার সুবিধা প্রাপ্ত মহিলাদের কাছে বিজেপির মহিলা মোর্চা পৌঁছচ্ছে। সুবিধা প্রাপ্ত মহিলাদের সঙ্গে সেলফি তুলে দলের সদর দপ্তরে পাঠাতে বলা হয়েছে। মোর্চার নেতৃত্বকে গোটা দেশে এক কোটি মহিলার সঙ্গে সেলফি তোলার কর্মসূচি নিয়েছে মহিলা মোর্চা।
আর হোলির পরেই ময়দানে নামতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী। দিল্লির সদর দপ্তর সব রাজ্য কমিটির কাছে মোদীর সভার পছন্দসই সময় জানতে চেয়েছে। হোলির পর থেকে জুন পর্যন্ত একাধিক রাজ্যে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। জুলাই আগস্ট ভরা বর্ষার সময় কোনো বড় ময়দানে সভা করা সম্ভব নয় । তাই সেই সময় ভার্চুয়ালি সভা করার ভাবনা বিজেপির। বাংলায় পুজোর আগে এবং পরে মিলিয়ে দু’মাস সভা সমাবেশ একপ্রকার বন্ধ থাকে। মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকসহ বিভিন্ন বোর্ডের পরীক্ষার জন্য অনেক রাজ্যে একমাস প্রকাশ্যে মাইক বাজানো বন্ধ রাখা হয়। সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর সভা কোনো বড় স্টেডিয়ামে করা সম্ভব কিনা তাও দেখা হচ্ছে।
বাংলাকে নিয়ে বিজেপির বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে বলেই খবর। নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সংসদে দুই তৃতীয়াংশ আসন এবার লক্ষ্যমাত্রা বিজেপির। এর জন্য বাংলায় তাদের অন্তত ২৫ টি আসনের জয় পেতে হবে। গতবারে ১৮ টি আসন দখলে রাখার সাথে আরো সাতটি আসনে জয় নির্দিষ্ট করতে হবে।
দলের নেতারা মনে করছেন, বাংলার জন্য যে প্যাকেজ তৈরি হচ্ছে তাতেই মোড় ঘুরে যাবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে মোদীজির ১০ বছরের কাজের জন্য মানুষ ভোট দেবে বলে তাদের মত। একই সঙ্গে আঞ্চলিক প্রত্যাশা পূরণের ঘোষণা থাকবে বঙ্গ বিজেপির তরফে।