পুলিশকে টাকা দিলেই চোরাই কাঠ পৌঁছে যায় মিলে!

আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ২০ নভেম্বর: বনদফতরের অনুমতি ছাড়াই নির্বিচারে চলছে বৃক্ষ নিধন। আর পুলিশকে পয়সা দিয়েই সেই কাঠ পাচার করা হচ্ছে বিনা বাধায়। ফলে ধ্বংস হচ্ছে সবুজ। বিজ্ঞানীরা যখন বেশি করে গাছ লাগানোর পরামর্শ দিচ্ছেন তখন পুলিশ প্রশাসনের অসহযোগিতায় হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতি।
বনদফতরের নজর এড়িয়ে বেশ কিছু জায়গায় চলছে গাছ কাটা। মাঝেমধ্যে বনদফতর অভিযান চালিয়ে গাছ কাটা রুখলেও বহু ক্ষেত্রে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তাছাড়া গাছ পাচারের জন্য পুলিশ অনেকটাই দায়ী। কারণ সামান্য পয়সার বিনিময়ে গাছ পাচারে সাহায্য করছে তারা। এমনই ছবি ধরা পড়েছে তারাপীঠ থানার পাইকপাড়া গ্রামে। ওই গ্রামে ঢোকার মুখে হাটগাছি পুকুর পাড় থেকে বনদফতরের অনুমতি ছাড়াই কেটে নেওয়া হয়েছে ছয়টি প্রাচীন তেঁতুল গাছ। খবর পেয়ে বনদফতরের তুম্বুনি রেঞ্জের বিট অফিসার এলাকায় যান। তারা নিজেরাই গাছ কাটার ছবি ক্যামেরা বন্দি করেন। বাজেয়াপ্ত করেন গাছ কাটার যন্ত্রপাতি।

গ্রামের বসিন্দা গাছের অন্যতম মালিক নুরুল আজিম বলেন, “পুকুরের ধারে গাছ হওয়ায় ভেঙ্গে পড়ছে। তাই ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। তবে যাকে বিক্রি করা হয়েছে তিনি বনদফতরের অনুমতি নিয়েছেন কিনা বলতে পারব না”। গাছ কিনেছেন মাড়্গ্রামে দোস্ত মহম্মদ নামে জনৈক ব্যক্তি। তিনি বলেন, “ছয়টি গাছ কাটা হয়েছে। মালিক পক্ষ আমাকে বিক্রি করে দিয়েছে। এই গাছ কেটে স্কুলে স্কুলে রান্নার জন্য বিক্রি করি। এই কাঠ রাস্তা দিয়ে মিলে নিয়ে যাওয়ার সময় তারাপীঠ এবং মাড়গ্রাম থানার ডাকমাষ্টারকে রীতিমত ছয়শো টাকা দিতে হয়। টাকা দিলে থানার ছাড় পত্র মেলে”। তবে এই গাছ কাটার কোনও অনুমতি তিনি বনদফতরের থেকে নেননি বলে স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “ইউক্যালিপটাস গাছ কাটতে গেলে বনদফতরের অনুমতির প্রয়োজন। কিন্তু এসব গাছের ক্ষেত্রে অনুমতি প্রয়োজন হয় না বলে জানি”।

বনদফতরের তুম্বুনি রেঞ্জের বিট অফিসার সবুজ সূত্রধর বলেন, “গাছ কাটলেই বনদফতরের অনুমোদন প্রয়োজন। এক্ষেত্রে নেওয়া হয়নি বলে জানি। আমরা গাছ কাটার সমস্ত যন্ত্রাংশ বাজেয়াপ্ত করলাম। গাছ মালিক এবং যিনি গাছ কাটছেন তার সমস্ত তথ্য জেলায় পাঠাবো। তারাই যা পদক্ষেপ নেওয়ার নেবেন”।

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here