
আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ২৫ ফেব্রুয়ারি: মেদিনীপুর শহরের প্রগতিশীল ও অগ্রণী সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা সংগঠন সমন্বয়ে গঠিত ‘একুশে মঞ্চের’ উদ্যোগে বিগত দুই দশক ধরে ২১ ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহিদ দিবস’ উদযাপন করে আসছে।সেই সূত্র ধরে এ’বছরেও শহরের গুহরায় ভবনের সভাগৃহে যথাযথ মর্যাদায় মাতৃভাষা দিবস পালন করা হল। দ্বিশত বর্ষ জন্মবর্ষে বিদ্যাসাগর মূর্তির পাদদেশ থেকে বিকালে পদযাত্রা ও ভাষা আন্দোলনের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করা হয়।
মূল অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব সূচনা হয় শহরের বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী সর্বানী হালদারের সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে। গত দুই দশক ধরে একুশে মঞ্চের পথচলা নিয়ে প্রারম্ভিক বক্তব্য রাখেন গণনাট্যের জেলা সম্পাদক জয়ন্ত চক্রবর্তী।
২০০৫ সাল থেকে একুশে মঞ্চের উদ্যোগে শহরের এক প্রবীণ শিল্পী যিনি সাংস্কৃতিক জগতে উল্লেখযোগ্য সাক্ষর রেখেছেন এমন একজন গুণী শিল্পীকে ‘একুশে সম্মানে’ সম্মানিত করা হয়। এ বছরে একুশে সম্মান দেওয়া হল বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ বিশ্বেশ্বর সরকারকে। ‘একুশে সম্মান -২০২০’-অক্ষর বৃক্ষের আদলে তৈরী সুদৃশ্য বিশেষ স্মারকটি বিশ্বেশ্বর সরকারের হাতে তুলে দেন আর এক বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী জয়ন্ত সাহা। পূর্ণ সভাগৃহের উপস্থিত সুধীজনেরা আসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে করতালির মাধ্যমে শিল্পীকে সম্মান জানান।এ’বছর হতে একটি অতিরিক্ত সম্মাননা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন ‘বিশ্ববীণা ফাউন্ডেশন ‘। এই সংস্থার তরফ হতে একুশে সম্মান প্রাপকের হাতে দশ হাজার টাকার একটি চেক তুলে দেন ডঃ রীণা পাল, ডঃ অপর্ণীতা ভট্টাচার্য ও ডঃ সর্বশ্রী ব্যানার্জি। একুশে মঞ্চের সূচনা লগ্ন থেকেই একজন শিশুকে তার মাতৃভাষার মাধ্যমে শ্লেট পেন্সিলে হাতেখড়ি দেওয়া হয়। এবারে একুশে সম্মান প্রাপকের হাত ধরে হাতেখড়ি হল সপ্তক পানের। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে স্মারক বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নভেন্দু হোতা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সংগীত-আবৃত্তি ও নৃত্যে অংশগ্রহণ করে ছন্দম সংগীত মহাবিদ্যালয়, রথীন দাস, ঝুমঝুমি চক্রবর্তী, অনিন্দ্যসুন্দর সেন, আবৃত্তি শিল্পী সংসদ, ঋক আবৃত্তি সংস্থা, আগমনী কর মিশ্র, নরোত্তম দে, রত্না দে, শ্রীতমা চ্যাটার্জির, অভিনন্দা মজুমদার, লাস্য ড্যান্স একাডেমি, খেয়া- এক অনন্য দিশারী এবং একটি সাঁওতালি সংগীত পরিবেশন করেন বিমল বাস্কে।
সমগ্র অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ কবি নিলয় মিত্র, সঙ্গীত শিল্পী জয়ন্ত সাহা, লোকসংস্কৃতি গবেষক ডঃ মধুপ দে, দিলীপ চক্রবর্তী, শিক্ষাব্রতী প্রীতিকণা গোস্বামী, সাংস্কৃতিক নেতৃত্ব বিজয় পাল, কবি কামরুজ্জামান, বাচিক দম্পতি অমিয় পাল, মালবিকা পাল, গঙ্গাধর বর্মন, ডাঃ বিমল গুড়িয়া, লক্ষণ ওঝা, চিত্রশিল্পী প্রদীপ কুমার বসু, নাট্য শিল্পী মাধবী পাল প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করে অর্ণব বেরা, কেয়া সেন ও পিনাকী মজুমদার।