আমাদের ভারত, দুর্গাপুর, ২১ জানুয়ারি: নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন হুগলীর বলাগড়ের তৃণমূলের নেতা কুন্তল ঘোষ। তার বিরুদ্ধে ব্যাঙ্কশাল আদালতে ৩০ কোটি টাকার নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়েছে ইডি বলে খবর। এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই সরব হয়েছেন বিজেপি নেতারা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেছেন চোরে মায়ের বড় গলা। রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি দুর্নীতির অভিযোগ, আর সেই তৃণমূলের নেত্রী কিনা মেঘালয়ে গিয়ে দুর্নীতি মুক্ত প্রশাসন গড়তে তৃণমূলকে ক্ষমতায় আনার কথা বলেছেন।
শিল্প শহর দুর্গাপুরে একটি হোটেলে বঙ্গ বিজেপির দুদিনের কার্যকরণি বৈঠক চলছে। সেই বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে সকালে বিজেপির একাধিক নেতা শহরের বিভিন্ন মন্দিরে পুজো দেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি ও শহরের অন্যতম প্রাচীন কালী মন্দির ভিড়িঙ্গী মায়ের মন্দিরে পুজো দেন। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময় সাংবাদিকরা তাকে কুন্তল ঘোষ গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, তিনি পশ্চিমবঙ্গের একেবারে টপ চার/পাঁচটা চাকরির মধ্যে একটি চাকরি করেছেন ১০-১২ বছর। কিন্তু তারপরেও কুন্তল ঘোষের মতো বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কেনার ক্ষমতা তার অন্তত নেই। প্রসঙ্গত, কলকাতায় কুন্তল ঘোষের দু-দুটি ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় ইডি। সুকান্ত মজুমদার বলেন, সাধারণ মানুষ কি দেখে এগোবে? বাঙালির তো এটুকুই ছিল। বাঙালি অল্প পয়সায় থাকতো, কিন্তু সততার সাথে থাকতো, আত্মসম্মান বিসর্জন দিত না। মেধার চর্চা করতো জ্ঞানের চর্চা করতো। সেই বাঙালিকে কোন জায়গায় এরা নিয়ে যায় সেটা দেখার অপেক্ষায় আমরা রয়েছি। বাংলার মানুষ দেখছে এরা কত নিচে নামতে পারেন।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, চোরের মায়ের বড় গলা। সুকান্ত মনে করিয়ে দেন, “কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মেঘালয় গিয়ে বলে এলেন দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনের জন্য নাকি তৃণমূল কংগ্রেসকে মেঘালয়ে ক্ষমতায় আনা উচিত। অথচ রাজ্যে এই ধরনের দুর্নীতির ঘটনা ঘটছে। যার সাথে তৃণমূলের যুব নেতা জড়িয়ে রয়েছে।” সুকান্ত অভিযোগের সুরে বলেন, “কলকাতার রীতিমতো নামকরা এলাকায় দু-দু দুটো ফ্ল্যাট আছে ওই যুবনেতার। এক একটা ফ্ল্যাটের দাম মিনিমাম ৫০ লাখ টাকা তো হবেই অর্থাৎ এক কোটি টাকার ফ্ল্যাট আছে। অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছেন।”
অন্যদিকে শহরের একটি শিব মন্দিরে পুজো দিয়ে বেরিয়ে বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের হাত অনেক লম্বা। আদালতের হাতও কম লম্বা নয়। সঠিক সময় সব ব্যবস্থা হবে। দুর্নীতির দিকে নজর রয়েছে হাইকোর্ট সহ সমস্ত তদন্তকারী সংস্থার। সঠিক সময় ব্যবস্থাও নিচ্ছেন তারা। যেমন যেমন তথ্য হাতে আসবে তেমন তেমন ব্যবস্থা নেবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এভাবেই কলুষ মুক্ত হবে সারা বাংলা। রাজ্য জুড়ে যেভাবে টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে তাতে সরকারই এবার টেন্ডারে চলে যাবে।”