নাগরিকত্ব বিল সংবিধান বিরোধী, আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ মুসলিম লিগ ও জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ

আমাদের ভারত,১২ ডিসেম্বর:বিরোধীদের ব্যাপক প্রতিবাদ সত্ত্বেও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৯ পাস হয়ে গেছে সংসদের উভয় কক্ষেই। কিন্তু বৃহস্পতিবারই এই বিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলো ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন অফ মুসলিম লীগ ও জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। তাদের আবেদন প্রস্তাবিত আইনটি সংবিধান বিরোধী। কারণ এই আইন ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলেছে।

মুসলিম লীগের হয় সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করেছেন আইনজীবী তথা কংগ্রেস সাংসদ কপিল সিব্বল। তিনি জানিয়েছেন নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলকে অবৈধ ঘোষণা করার আর্জি করা হয়েছে আদালতে।

প্রস্তাবিত বিল অনুযায়ী পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান থেকে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ যদি ধর্মীয় অত্যাচারের ভয়ে পালিয়ে আসে তাহলে ভারতে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। ২০১৪-র সালের ৩১ ডিসেম্বর অব্দি যারা এ দেশে এসেছেন তারাই নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

কিন্তু বিলের বিরুদ্ধে একরকম অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাশ্মীর থেকে তুলে আনা হয়েছে সেনা। একাধিক ছাত্র সংগঠনের ডাকে ধর্মঘটও হয়েছে মঙ্গলবার। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এমনকি বিজেপির সহযোগী দলের সাংসদরা এই বিলের বিরোধিতা করেছেন।

মুসলিম লিগ ছাড়াও জমিয়ত উলেমায় হিন্দ ও এই বিলের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে।
শোনা যাচ্ছে নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে কংগ্রেস ও সিপিআইএম। কংগ্রেস নেতা কেসি বেনুগোপাল জানিয়েছেন, সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হবে।

অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, নতুন বিলের যুক্তিসম্মত বিভাজন করা হয়েছে। তা কখনোই সংবিধান বিরোধী নয়। এই সংবিধান বিশেষজ্ঞের কথা অনুযায়ী এই যুক্তি আদালত মেনে নিতে পারে। তার কথায় সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে আইনের চোখে সবাই সমান। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন রায়ে বলেছে যুক্তিসংগত বিভাজন আইনসঙ্গত।

নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতা করে মহারাষ্ট্রের আইপিএস অফিসার আবদুর রহমান পদত্যাগ করেছেন। তিনি মহারাষ্ট্র রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের আইজিপি র্যাঙ্কের অফিসার।

বিলটি পাসের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টুইট করে বলেছেন, “নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাসের মধ্য দিয়ে কোটি কোটি বঞ্চিত ও নির্যাতিত মানুষের স্বপ্ন পূরণ হলো। নির্যাতিতদের সম্মান ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আমি কৃতজ্ঞ।” বিলটিকে সমর্থনের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী এই দিনটিকে যুগান্তকারী বলে আখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু সোনিয়া গান্ধী দিনটিকে ভারতের সংবিধানের কালো দিন বলেছেন ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *