
পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ মার্চ: “ভাই ১২ পেতে পারে না, পেলে মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দেবো”, মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল পার্টি অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করে এই ভাষাতেই এসএসসি ও বিরোধীদের চ্যালেঞ্জ করলেন রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো। সমস্ত ঘটনায় ত্রুটি বিচ্যুতি ঘটিয়েছে এসএসসি, এই দাবি করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ও প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মন্ত্রী।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে এসএসসি-র মাধ্যমে সুপারিশ পত্র পাওয়া ৭৮৫ জন এবং সুপারিশ পত্র না পেয়েই নিয়োগ পাওয়া ৫৭ জন মিলিয়ে মোট ৮৪২ জন গ্রুপ সি কর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। সুপারিশ পত্র পেয়ে চাকরি যাওয়া ৭৮৫ জনের তালিকায় ২৮৪ নম্বরে রয়েছে খোকন মাহাতোর নাম। বৈতা শ্রী গোপাল হাইস্কুলে কর্মরত ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনীর বিধায়ক তথা মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোর ভাই খোকন মাহাতো। সেই সঙ্গে কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত প্রকৃত নম্বরের লিস্টে ১০৭৪ নম্বরে থাকা খোকন মাহাতো প্রথমে প্রকাশিত ওএমআর শিটে ৫৫ নম্বর পেলেও প্রকৃত প্রাপ্ত নম্বর ১২ বলা হয়েছে৷
সাংবাদিক বৈঠকে মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো এসএসসি কর্তৃক প্রকাশিত সেই প্রকৃত নম্বরের লিস্টকেই চ্যালেঞ্জ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “এসএসসি-র এই চাকরি থেকে বরখাস্ত করার বিষয়ে আমার ধারনা অনেক ক্ষেত্রে ভুল আছে। যাঁরা ভুল করেছেন তাঁদের চাকরি যাওয়া দরকার। কিন্তু ভুল বা ঠিক সঠিক ভাবে যাচাই করা দরকার। এই যাচাইয়ের ক্ষেত্রে এসএসসি-র লোকেরা ত্রুটি বিচ্যুতি করছে বলে আমার ধারণা৷” মন্ত্রীর অভিযোগ, “এমন ওএমআর শিট এসএসসি আপলোড করেছে যা সম্পূর্ণ ব্ল্যাঙ্ক। সেখানে শূন্য পাওয়ার কথা হলেও নম্বর ২ দেওয়া হয়েছে।”
ওএমআর শিটের হার্ডকপি ও প্রশ্নপত্র মিলিয়ে ফরেন্সিক পরীক্ষার মাধ্যমে পুনরায় মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছেন মন্ত্রী। তাঁর দাবি, “প্রকাশিত তালিকার প্রার্থীদের ওএমআর শিটের ফরেনসিক হয়নি। এটি বিকৃত তালিকা।”
স্কুল সার্ভিস কমিশনের উপর সমস্ত দায় চাপিয়ে শ্রীকান্ত মাহাতো নিজের ভাই খোকন মাহাতোর প্রাপ্ত নম্বরের বিষয়ে দাবি করেছেন, “যেদিক থেকেই বিচার করা হোক সে কোনো ভাবেই ১২ পাবে না।” তিনি বলেন, “আমি চ্যালেঞ্জ করছি, ওএমআর শিটের হার্ড কপি আর প্রশ্নের সঙ্গে অ্যানসার কি মিলিয়ে দেখা হোক, ও যদি ১২ পায় তাহলে আমি মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দেবো।” তিনি চাকরি যাওয়া প্রার্থীদের পাশাপাশি পৃথকভাবে আদালতে যাওয়ার কথাও জানিয়েছেন৷