রাজেন রায়, কলকাতা, ৫ জুলাই: এ যেন সর্ষের মধ্যেই ভূত! যাদের আমফানের ত্রাণ বিতরণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তারাই যে সেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন, এরকম ৩৪ হাজার অভিযোগের সারবত্তা পেল নবান্ন। একই সঙ্গে এবার শুরু হয়েছে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া। তবে যাদের দুর্নীতিতে দল এবং সরকারের মুখ পুড়েছে, তাদের বিরুদ্ধে এবার কড়া অবস্থান নেওয়া হবে, এমনটাও পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নবান্ন সূত্রে খবর, আমফানের ক্ষতিপূরণ বাবদ রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত ৬৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। রাজ্য সরকার ত্রাণ-সহ আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করতেই রাজ্যের সমস্ত জেলায় প্রচুর আবেদন জমা পড়ে। কিন্তু অভিযোগ, বিভিন্ন ছলচাতুরিতে তা চলে গিয়েছে অন্যজনের ভুয়ো অ্যাকাউন্টে। অভিযোগের প্রমাণ দাবি করতেই সমস্ত প্রমাণ সহ তা ফের সরকারের কাছে পেশ করেছে ওই সমস্ত পরিবারগুলি।
নবান্নের দাবি, আবেদন করেও যে ৩৪ হাজার প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার কোনও ক্ষতিপূরণ পায়নি তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে শীঘ্রই ২০ হাজার টাকা করে পাঠানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ ওঠায় ইতিমধ্যে ৪ জেলার ৫ জন বিডিওকে শো-কজ নোটিশ জারি করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও সরকারি টাকা মেলায় বেশ কিছু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি অভিযুক্ত গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ও প্রধানদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। দুর্নীতিতে যুক্ত থাকলে এবং তা প্রমাণিত হলে দল থেকে বের করে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে ক্ষতিপূরণ পান, তার জন্য শহরে ও গ্রামে এবার যথাযথ ভাবে সরেজমিনে খতিয়ে দেখে তবেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।