আমাদের ভারত, হুগলী, ২০ নভেম্বর : এ যেন এক অন্য চন্দননগর, আলোর শহরে ঘুরলে দু একটা যায়গা ছাড়া চোখে পড়বে না আলোর মায়াযাদু। থিমের বাহারে যে শহরটা এক অন্য রূপ পেত বছরের এই চার পাঁচদিন, এবছর তার একআনাও নেই বললেই চলে। তবু ফরাসি উপনিবেশের এই শহরে এবারও মা জগদ্ধাত্রী এসেছেন বলা যায়– স্বমহিমায় এসেছেন।
হাতে গোনা দু একটি বারোয়ারী ছাড়া প্রায় সব মন্ডপেই মা জগদ্ধাত্রী পুজিতা হবেন আপন রূপেই। কারন রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের আমলে মা জগদ্ধাত্রী যেভাবে পূজিতা হয়েছিলেন এবারও সেই বিশালাকার মাতৃমূর্তি শোভা পেতে শুরু করেছে বেশিরভাগ মন্ডপেই। কারন এই শহরের ঐতিহ্য সব বিসর্জন দিতে পারে, কিন্ত হাজার খারাপ পরিস্থিতিতেও মায়ের রূপ কনোওদিন বদলায়নি– করোনা আবহেও না। পুজোর বহু আগে থেকেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারী নিয়ম মেনে যতটা সম্ভব কম বাজেটের পুজো করার অনুরোধ করা হয়েছিল বারোয়ারীগুলিকে। খোলামেলা মন্ডপ, দূর থেকে দর্শনার্থীদের প্রতিমা দেখার ব্যবস্থা, মন্ডপে স্যানিটাইজিং ব্যবস্থা, মাস্ক ইত্যাদির ব্যবস্থা, সব নিয়ম মেনেই এবছর তাই জগদ্ধাত্রীর আরাধনায় এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
পুজোর দিনগুলিতে যে তিন শহরে লাখো লাখো মানুষের সমাগম হত এত বছর ধরে এবার তা হবে না ধরে নিয়েই কিছুটা মনমরা এই শহরের মানুষজন। বড় রাস্তা থেকে গলি যে যায়গায় এতদিন চারদিনের মেলা বসত এবার তা সারাবছরের মতই ফাঁকা বলা যায়।
দুর্গা পুজোর মত একসাথে মন্ডপে বসে আড্ডা, অঞ্জলি, বসিয়ে ভোগ খাওয়ানো তাই এবার বন্ধ। সবচেয়ে বড় বিষয় এই শহরের যে জিনিসটা দেখার জন্য দেশ তথা বিশ্বের মানুষ অপেক্ষা করে থাকত সেই আলোকজ্জ্বল শোভা যাত্রাও এবার বাতিল হয়েছে করোনার কারনে। তবুও ফরাসডাঙায় মা এসেছেন এবং এসেছেন স্বমহিমায়।