“কেউ আটকাতে পারবে না, নতুন করে লেখা হবে দেশের ইতিহাস,” হুঙ্কার অমিত শাহের

আমাদের ভারত, ২৫ নভেম্বর: নতুন করে দেশের ইতিহাস লেখা হবে, কেউ আটকাতে পারবে না। এমনই হুংকার দিলেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দিল্লিতে অসম সরকার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার লড়াইয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের অবদান নিয়ে আলোচনায় এমনটাই বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

অমিত শাহ বলেন, “আমি ইতিহাসের ছাত্র। আমি জানি যে ইতিহাস আমাদের পড়ানো হয়েছে তা বিকৃত এবং অসম্পূর্ণ। তাই এবার প্রকৃত ইতিহাস লেখা হবে। চ্যালেঞ্জের ভাষিতেই তাঁর মন্তব্য, নতুন করে ইতিহাস লেখার কাজে কেউ আমাদের আটকাতে পারবে না।

এর আগেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ইতিহাস নতুন করে লেখার উপর জোর দিয়েছিলেন। ইতিহাসের আলোচকদের মতে সরকার স্বীকৃত ইতিহাস নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। রাজনৈতিক বিতর্ক যেমন আছে তেমন আঞ্চলিক বিবাদ কম নেই। আদিবাসী সমাজ প্রায়সই বলে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের জনজাতির ভূমিকা সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ হয়নি ভারতের ইতিহাসে।জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ড ঘিরে ব্রিটিশের নিষ্ঠুরতা ও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কাহিনী ঠিক যতটা মর্যাদার সঙ্গে লেখার উচিত ছিল তা হয়নি।

অমিত শাহ নিজের বক্তব্যে অসমের ঐতিহাসিক সরাইঘাট যুদ্ধের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। তিনি লাচিত বরফুকনের বিরক্তির কাহিনী তুলে ধরেন। যিনি ১৬৬৯ সালে মুঘলদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। লাচিত বরফুকান শুধু উত্তর ভারত নয় গোটা দক্ষিণ এশিয়াকে ধর্মান্ধ হামলাবাজদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন বলে দাবি করেন তিনি।

তবে অনেকেই শাহের বক্তব্য নিয়ে সন্ধিহান। যে ইতিহাস লেখা হয়েছে তা অসম্পূর্ণ এবং বিকৃত বলে তারা মনে করলেও তাদের আশঙ্কা বিজেপি সরকার ইতিহাসকে ধর্মীয় মেরুকরণের অস্ত্র করতে চলেছে। তাই নতুন করে ইতিহাস রচনা করতে চাইছে কারণ তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ।

নতুন ইতিহাস রচনার পথে ইতিমধ্যে বিজেপি সরকার চলতে শুরু করেছে। নেতাজি ও আইএনএ মিউজিয়ামে কংগ্রেসের ত্রিপুরি ও হরিপুরা অধিবেশনে মহাত্মা গান্ধী ও সুভাষের বিরোধের আখ্যান উল্লেখ করা হয়েছে। প্রকাশ করা হয়েছে স্বাধীনতা আন্দোলনে দামোদর সাভারকারের ভূমিকাও। মিউজিয়ামে একটা বড় অংশে বিপ্লবীদের কালা পানির অধ্যায় তুলে ধরা হয়েছে। ইতিমধ্যেই পাঠক্রম, সরকারি বিভিন্ন নথি সহ বেশ কিছু ক্ষেত্রেই নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে অবিভক্ত ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করার কাজ শুরু করেছে কেন্দ্র বলে খবর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *