এনআরসি আতঙ্ক, বীরভূমে গৃহবন্দি ইন্টারনেট সাথীরা

আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ২৪ জানুয়ারি: একের পর এক গ্রামে বিক্ষোভের জেরে আতঙ্কিত ইন্টারনেট সাথীরা। কেউ গৃহবন্দি, কেউ কেউ গ্রাম ছাড়া। কারও বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশের সামনেই। পুলিশি আশ্বাসে তাই আর ভরসা পাচ্ছেন না গ্রামের ইন্টারনেট সাথীরা। ফলে অনেকেই নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।

এনআরসি এবং সিএএ-এর বিরোধিতা করে ব্লকে ব্লকে সভা করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সেই সমস্ত সভায় তিনি নির্দেশ দেন কেউ সার্ভে করতে গেলে ঝাঁটা মারবেন, কাউকে যেমন ভাবে ঢিল ছুঁড়ে মারেন, সেইভাবে মারবেন। এরপরেই রামপুরহাট মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে ‘ইন্টারনেট সাথী’ মহিলাদের বাড়িতে বিক্ষোভ শুরু হয়। নলহাটি ১ ও ২ এবং মুরারই ১ ও ২ নম্বর ব্লকে বিক্ষোভ প্রথম শুরু হয়। এরপরেই সেই আঁচ পড়ে ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে। গৌরবাজার গ্রামে ইন্টারনেট সাথী এক মহিলার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর বাড়ির সর্বস্ব পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। এখনও তারা গ্রামে ঢুকতে পারেনি।

এরপর কানাচি গ্রামে বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই গ্রামের ইন্টারনেট সাথী সাহেনি সুলতানা বলেন, “পঞ্চায়েত প্রধান এবং সদস্য আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। পরে পুলিশ এসে গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে বাড়ি পাঠায়। তবুও আমি আতঙ্কে রয়েছি। এখনও গ্রামের মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। পুলিশ কেন আমাদের ধরে নিয়ে গেল না সেই প্রশ্ন তুলছে। হামলার আতঙ্ক রয়েছে। ওরা ভাবছে আমরা এনআরসির হয়ে কাজ করছি। কিন্তু আমরা এনআরসির কাজ করছি না। শুধুমাত্র গ্রামের ১৫ থেকে ৬৫ বছরের মহিলাদের ইন্টারনেট ও মোবাইল চালানোর প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর নাম, ঠিকানা এবং ছবি সংগ্রহ করি”।

গ্রামের বাসিন্দা সেবিনা বিবি বলেন, “গ্রামের মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন। ভাবছে এই সব তথ্য মোদীর কাছে পাঠিয়ে দেবে। তবে পুলিশ ও বিডিও এসে অনেক বুঝিয়েছে। এটা এন আর সি নয় সে ধারনা মানুষের মধ্যে দিয়েছেন তারা”।

ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের বিডিও গোরাচাঁদ বর্মণ বলেন, “একটা গুজব ছড়িয়েছে। আমরা মাইকিং করে জানিয়ে দিয়েছি এন আর সির কাজ চলছে না। কাজ করছে ইন্টারনেট সাথীর মহিলারা। তাদের কাজ বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। মানুষের মন থেকে আতঙ্ক দূর হলে তবেই কাজ শুরু করতে পারবে”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *