
আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ১২ মার্চ: ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইলের খুদমরাই অঞ্চলে লোধা শবর সম্প্রদায়ের এক বৃদ্ধাকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে তার উপর মধ্যযুগীয় বর্বরতা চালানোর ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সারা শরীরে গরম লোহার রডের ছ্যাঁকা আর মারধরের আঘাত নিয়ে সাঁকরাইলের ভাঙ্গাগড় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি হয়েছেন ওই বৃদ্ধা। অত্যাচারিত ওই বৃদ্ধার নাম চম্পা আড়ি। বাড়ি সাঁকরাইল থানারই বাগমারি গ্রামে। সোমবার পুরো ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে সাঁকরাইল থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন অত্যাচারিতার ছেলে সুশীল আড়ি। রবিবার সন্ধ্যায় এই ভয়ংকর ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই ওই বৃদ্ধা একাই থাকেন বাড়িতে। লাগোয়া গ্রাম ভালকিশোলের রবীন্দ্র হাঁসদা এবং তাঁর সঙ্গীরা ওই মহিলার উপর অত্যাচার চালায় বলে অভিযোগ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন, রবিবার সন্ধ্যায় রবীন্দ্র ও তাঁর দলবল চম্পা দেবীকে তাঁর বাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে পাশের গ্রাম ভালকিশোলের বাড়িতে নিয়ে যায়। অভিযোগ, এরপর রবীন্দ্র সহ ৫-৬জন মিলে চম্পার শরীরে লোহার গরম রোড চেপে ধরে। শবর সম্প্রদায়ের ওই বৃদ্ধাকে প্রথমে প্রচন্ড মারধর করা হয়। এরপর চলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গরম রডের ছ্যাঁকা দেওয়ার পালা। গরম রডের ছ্যাঁকায় হাত, পা সহ বিভিন্ন জায়গার চামড়া পুড়ে উঠে গেছে। অত্যাচার চালানোর পর ওই বৃদ্ধাকে তাঁর ঘরে পৌঁছে দেয় অত্যাচারীরা। ব্যাথা, যন্ত্রণা আর অপমাণের জ্বালা নিয়ে নিজের ঘরে ডুকরে ডুকরে কাঁদেন চম্পা।এরপর কয়েকজন সিভিক পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারে সাঁকরাইল থানার পুলিশ। ঘটনাস্থলে গিয়ে অত্যাচারিত মহিলাকে ভাঙ্গাগড় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করে। বৃদ্ধার ছেলেও খবর পেয়ে ছুটে আসেন। ঘটনায় সাঁকরাইল থানায় ৬ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়।পুলিশ ৩ জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আজ তাদের আদালতে তোলা হলে মহামান্য আদালত ৭ দিনের পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দেন।