আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ২৬ জুলাই: কোনও চিকিৎসা না করেই করোনা সন্দেহে হাসপাতালের বাইরে বের করে দেওয়া হল রোগীকে। হাসপাতালের সামনে প্রায় এক ঘন্টা পড়ে থাকার কারণে মৃত্যু হল বৃদ্ধার। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগণার বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে। এমন চঞ্চল্যকর দৃশ্য দেখে হতবাক অন্যান্য রোগীর আত্মীয়রা। অভিযোগ, রাজ্যে যে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ এই ঘটনা। যদিও হাসপাতাল সুপার জানিয়েছেন ওই জায়গাটি হাসপাতালের আইসোলেশন। তাই রোগীকে ওখানেই রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
পরিবার সূত্রের খবর, শনিবার বিকাল ৫টা নাগাদ হালকা জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে বনগাঁ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বনগাঁর বাসিন্দা মাধব নারায়ণ দত্ত। রাত আটটা নাগাদ চিকিৎসক তার শ্বাসকষ্ট ও জ্বরের কথা শুনেই করোনা সন্দেহ করে ওই বৃদ্ধাকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তর করে দেন। এরপর ওয়ার্ডের নার্স ও আয়ারা রোগীকে বাইরে নিয়ে যেতে চাপ দেয় পরিবারে লোকজনদের। তিন ঘন্টা হাসপাতাল বেডে পড়ে থাকলেও অক্সিজেন তো দূরের কথা কেউ রোগীর আশপাশেও এসে দেখেনি বলে অভিযোগ।
করোনা হয়েছে এমনই সন্দেহে অমানবিক আচারণ করে বনগাঁ হাসপাতালের কর্মীরা। হাসপাতালের বেড থেকে আইসোলেশন রুমে নিয়ে যাওয়ার জন্য মেলেনি হাসপাতালের স্ট্রেচার পর্যন্ত। বৃদ্ধার স্ত্রী আল্পনা দত্ত কোনও রকমে নিজের স্বামীকে হাসপাতালের বাইরে নিয়ে আসেন। এরপর কাছে আসে না কেউই। একা অসহায় আল্পনাদেবী হাসপাতাল এলাকায় থাকা অ্যাম্বুলেন্স থেকে শুরু করে ভ্যান রিক্সা ডাকলেও কেউই কাছে আসেনি। অবশেষে তিনি নিরুপায় হয়ে সেখানেই বসে থাকেন। প্রায় এক ঘন্টা রাস্তায় পড়ে থেকে মৃত্যু হল মাধব নারায়ণ দত্তের।
যদিও বনগাঁ হাসপাতালের সুপার শঙ্কর কুমার মাহাত জানান, কলকাতা নিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় ওই রোগীকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল। ওই রাস্তাটা নাকি হাসপাতলের আইসোলেশন। এমন ঘটনা চোখের সামনে দেখে অন্য এক রোগীর আত্মীয় শ্যামল হালদার বলেন, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো সত্যিই ভেঙে পড়েছে। এমন আমানবিক আচরণ হাসপাতাল কর্মীদের হলে মানুষ রাজ্যসরকারের দিক থেকেও এই ভাবে মুখ ফিরিয়ে নেবে।