(অভিযুক্ত ব্যক্তি)
স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদিয়া, ১১ জুলাই:
বিজেপির ভয় দেখিয়ে অন্যের বাড়ি দখল করার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সে বলছে সে বিজেপি করে, আর এই ভয় দেখিয়েই সে বাড়ির দখল ছাড়তে চাইছে না–অভিযোগ বাড়ির মালিকের। শান্তিপুর পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের হরিদাস লেনের ঘটনা।
জানা যায়, সহদেব বিশ্বাস গত ২০১২ সালে শান্তিপুর পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের হরিদাস লেনের মিনা চক্রবর্তীর কাছ থেকে একটা বাড়ি কেনেন। কিন্তু বাড়ি কেনার পরেই তার ছেলে কল্যাণীতে হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়তে যায়। সে কারণে তারা তালা দিয়ে কল্যাণীতে চলে যান। বাড়ি ফাঁকাই পড়ে ছিল। সেই সময় সহদেববাবুর পরিচিত নেপাল বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি তাঁর কাছে এসে বলেন, যে বাড়িটা যখন ফাঁকা পড়ে আছে, তোমরা যখন এখানে কেউ থাকছো না তাহলে আমার বাড়ি তৈরি করা পর্যন্ত আমি দু বছর তোমাদের বাড়িতেই থাকবো। আমার বাড়ি হয়ে গেলে আমরা তোমার বাড়ি ছেড়ে উঠে যাব। তাই তারা তাকে থাকতে দিয়েছিল বলে সহদেব্বাবু জানিয়েছেন। এখন ছেলের পড়া শেষ হয়ে গেলে তাদের বাড়ি ছেড়ে দিতে বলছেন কিন্তু তারা ছাড়ছেন না। অভিযোগ, নেপাল বিশ্বাস এবং তাঁর স্ত্রী তাদের বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেয়। এমনকি প্রাণে মারার হুমকি এবং পরনের কাপড় ছিঁড়ে থানায় শ্লীলতাহানীর অভিযোগ দায়ের করার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ সহদেববাবুর।
বাড়ি না ছাড়ার ব্যাপারে নেপাল বাবুর যুক্তি, প্রতি মাসে আড়াই হাজার টাকা ভাড়া চুক্তিতে আমি এই বাড়িতে আছি। বিগত আট বছর ধরে তিনি বাড়িটাতে ভাড়া দিয়ে রয়েছেন। প্রমাণ হিসাবে থানাতেও ভাড়া দেওয়ার কাগজপত্র তিনি দেখিয়েছেন বলে তাঁর দাবি। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, মাসের টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে দিয়েছেন তার ছেলের অ্যাকাউন্টে। তাঁর স্ত্রীর বক্তব্যের ব্যাপারে তিনি অবশ্য কিছু বলতে চাননি।
সহদেববাবু জানান, আমার ছেলের কাছ থেকে ব্যবসার জন্য নেপাল বিশ্বাস ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিল। সেই টাকায় সে প্রতি মাসে আড়াই হাজার করে শোধ দিচ্ছে। আর যদি বাড়ির ভাড়া দিতেই হয় তাহলে ছেলের অ্যাকাউন্টে কেন বাড়ি তো আমার নামে টাকা তো আমাকেই দেওয়া উচিত।
শান্তিপুর পৌরসভার প্রশাসক তথা তৃণমূল নেতা অজয় দে জানান, আমার কাছে সহদেব বিশ্বাস এসেছিল। আমি বলেছি তাকে আইনের পথে যেতে। কারণ যদি সে নিয়মানুযায়ী বাড়ি ক্রয় করে থাকে তাহলে কেউ জবরদখল করে দীর্ঘদিন সেটাকে আটকে রাখতে পারে না। তার জন্য আইন আছে। আইন আইনের পথেই চলুক সেটা আমি চাই। আর আইনের দিক থেকে যদি কোনও সাহায্য সহযোগিতা দরকার হয় তাহলে আমার কাছ থেকে সে নিশ্চিতভাবে সহযোগিতা পাবে।
রানাঘাটের দক্ষিণের সাংসদ জগন্নাথ সরকার জানান, নেপাল বিশ্বাস তার দলের কেউ নয়। সমর্থক হতেই পারে। তবে আইনের ঊর্ধ্বে কেউই নয়। যদি তার বিরুদ্ধে এরকম কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে আমি প্রশাসনকে বলব তার বিরুদ্ধে যেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।